অ্যাক্রেডিটেশন সনদ পেল বিসিএসআইআরের চামড়া গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান। রোববার (১২ জুন) বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) যৌথ সেমিনারে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সনদ দেওয়া হয়।  

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর-সাইন্স ল্যাবরেটরি) চামড়া গবেষণা ইনস্টিটিউট, যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইটিএস ল্যাবটেস্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকা ল্যাবরেটরি, তুরস্কভিত্তিক সংস্থা ল্যাব রাইট বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকা ল্যাবরেটরি, কন্টিনেন্টাল ইনস্পেকশন কো. বিডি লিমিটেডের টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও এজিএস কোয়ালিটি অ্যাকশন লিমিটেড।

‘অ্যাক্রেডিটেশন; টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা করে’ শীর্ষক সেমিনারে 
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। 

এ ছাড়াও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএবির মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম।   

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, পণ্যের মান ও গ্রহণযোগ্যতাই ভোক্তাদের মনে আস্থার তৈরি করে, যার মাধ্যমে বিকশিত হয় বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ, এমতাবস্থায় পণ্য ও সেবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে অ্যাক্রেডিটেশনের কোন বিকল্প নেই। 

দেশীয় ল্যাবরেটরি সমূহে আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজনের মাধ্যমে পণ্যের সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিতকরনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। এ বিষয়ে সরকার একটি মান নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে বলে জানান তিনি।  

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অ্যাক্রেডিটেশনের ভূমিকা অপরিসীম। সনদ প্রদানকারী সংস্থা সমূহের মান ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকরী ভূমিকা রাখা যাবে এবং এ লক্ষ্যে সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। 

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক জলবায়ুতে নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও প্রতীয়মান। রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতকরণ ও যথাযথ অবকাঠামোর কোনো বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অ্যাক্রেডিটেশনকে ‘ই-পার্সপোট’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। 
 
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশীয় শিল্প পণ্য ও সেবার মান উন্নয়ন, ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি সম্প্রসারণে অ্যাক্রেডিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায় টেকসই উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও আমাদের শিল্পখাতের অবকাঠামোর টেকসই উন্নয়ন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় না। 

বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী পণ্যগুলো, যেমন- চামড়া, পাট ও পাট পণ্য, প্লাস্টিক, হিমায়িত খাদ্য প্রভৃতির রপ্তানি আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টেকসই ব্যবসায়িক পরিবেশ বাস্তবায়নে সরকার গৃহীত নীতিমালার আশু বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। সেই সঙ্গে দেশের টেস্টিং ল্যাবরেটরিগুলোর সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। 

কোনো পণ্য অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের অনুমোদিত ল্যাবরেটরির সনদ পেলে তা বিশ্বব্যাপী অনায়াসে গ্রহণযোগ্য হয়। যেকোনো দেশে বিনা বাধায় সে পণ্য বাজারজাত করা সম্ভব হয়।

আরএম/আরএইচ