সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেল বিক্রি নিশ্চিতে কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা। বিবৃতিতে বলা হয়, বেশ কয়েকমাস ধরে ভোজ্যতেলের অস্থিরতা ঠেকাতে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন-সংক্রান্ত সরকারি কর্মকতা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় কমিটি।

এতে সরকারের নির্ধারণ করে দেয়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল মিলগেটে ১০৭ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১১০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১১৫ টাকায় বিক্রির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াাবিন তেল মিলগেটে ১২৩ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১২৭ টাকা এবং খুচরা বিক্রয় মূল্য ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন মিলগেটে ৫৯০ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ৬১০ টাকা এবং খুচরা বিক্রয় মূল্য ৬৩০ টাকা করা হয়েছে।

কিন্তু এখনো বাজারে আগের বাড়তি দামেই ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে। যা সরকারের সিদ্ধান্তকে অসম্মান করা হচ্ছে। এ দাম বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

আরও পড়ুন: পেঁয়াজে মনোযোগ, সুযোগে অস্থির ভোজ্যতেলের বাজার

ক্যাবের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইতোপূর্বে সরকার আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল, কিন্তু সেই দেওয়া দামে আলু পাওয়া যায়নি। দু-এক জায়গায় স্থানীয় প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে ধর্মঘট করে। এরপর আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উর্ধ্বমূখী চালের বাজারেও দাম বেঁধে দিয়ে, শুল্ক কমিয়ে, বিদেশ থেকে চাল আমদানি করেও কোনো ভাবেই অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। চিহ্নিত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।

ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী মাসে পাম ও সয়াবিন তেল উৎপাদনের মৌসুম। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতে পারে। আসন্ন পবিত্র রমজানে ভোজ্যতেল নিয়ে যেন কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে, সেজন্য এখন থেকে আমদানি, বিতরণ ও ভোক্তা পর্যায়ে বিপণনে কঠোর তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন: সহসা কাটছে না ভোজ্যতেলের ‘অস্থিরতা’

এছাড়াও পেঁয়াজের মতো কৃষকদের প্রণোদনা নিয়ে সরিষার উৎপাদন বাড়িয়ে সরিষার তেল উৎপাদন ও ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহার বাড়াতে উদ্ভুদ্ধকরণ করে বিকল্প বাজার তৈরির পরামর্শ দেন তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা। জেলা, উপজেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, ভোক্তা প্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত বাজার তদারিক অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও অস্থিরতা ঠেকানো সম্ভব।

ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান যৌথভাবে এসব দাবি জানান।

একে/এসএম