প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ওয়াশ খাতের বরাদ্দ বাড়লেও তা সার্বিক এডিপি বৃদ্ধির তুলনায় কম। প্রান্তিক ও দূরবর্তী এলাকার মানুষের ওয়াশ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওয়াশ বাজেট অপ্রতুল। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো ধীরগতিতে বাস্তবায়ন হবে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পরিবেশবিদরা। ওয়াটার এইড বাংলাদেশ, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ফানসা-বিডি, এফএসএন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিসটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ইউনিসেফ ও ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বাজেটে প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

ওয়াশ খাতে অপ্রতুল বাজেটের বিষয়ে বক্তারা বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রবণতা রয়েছে। হাওর এবং পার্বত্য এলাকায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে তবে চর এবং উপকূলীয় এলকায় বাড়েনি। এই ধারাটি উপকূলীয় অঞ্চল ও চরে বসবাসকারী মানুষের জন্যও অব্যাহত রাখা উচিত। যাতে করে কেউ যেন পিছিয়ে না পড়ে। 

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পগুলো নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মনোযোগী হওয়া এবং গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ওয়াশ খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন। দূরবর্তী অঞ্চলের প্রান্তিক কমিউনিটির মানুষের জন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বর্তমান বাজেটে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা কম বলেও অনুষ্ঠানে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।

ওয়াটার এইডের সহযোগিতায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সামগ্রিক এডিপি ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধির তুলনায় ওয়াশ এডিপি বরাদ্দ ৫.৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটের এডিপি বাজেটে মোট ওয়াশ বাজেট হলো এডিপি বরাদ্দের ২৪৬০.৬৬ বিলিয়ন টাকার মধ্যে মাত্র ১১৮.২ বিলিয়ন টাকা।

বক্তারা আরও বলেন, বাজেটে চর ও উপকূলীয় এলাকার বাজেট বরাদ্দ পর্যাপ্ত ছিল না। ইতোমধ্যে শহরাঞ্চলের মধ্যে বাজেট বরাদ্দের বৈষম্য এখনো বিরাজমান রয়েছে। ওয়াশ এডিপিতে স্থানিক বৈষম্য দূরীকরণ করার জন্য তারা সুপারিশ করেন। এফএসএম খাতের বরাদ্দ হ্রাসের বিষয়টি দেশজুড়ে স্যানিটেশন কাভারেজ বৃদ্ধির বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করবে। হাইজিন খাতে কিছুটা বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন করলে পুরো দেশজুড়ে ওয়াশ খাতের কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হবে না।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বক্তব্য রাখেন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের মনিরুল আলম, ফানসা বিডির যোসেফ হালদার, এফ এসএম এর প্রতিনিধি আলাউদ্দিন, এমএসএমের প্লাটফর্মের অলক মজুমদার,এসডব্লিউর প্রতিনিধি জুবায়ের হাসান সহ প্রমুখ কর্মকর্তাবৃন্দ।

আইবি/এসএম