আয়করের আওতায় এসেছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫২টি কোম্পানি। যার মধ্যে গত ৬ মাসেই করের আওতায় বা কোম্পানি হিসেবে নতুন ই-টিআইএন নিয়েছে ৫৭ হাজার ৫৩৫টি কোম্পানি। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের দেওয়া প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু'মিন বিষয়টি ঢাকাপোস্টের কাছে স্বীকার করেছেন।

২০২০ সালের ১৯ আগস্ট এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) পরিচালক মো. শব্বির আহমদের নেতৃত্ব ৭ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। টাস্কফোর্স কোম্পানির ই-টিআইএন নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল ও শতভাগ সঠিক অডিট রিপোর্ট নিয়ে কাজ করছে।

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫২টি কোম্পানি ই-টিআইএন নিয়েছে। এর মধ্যে ছয় মাসে কোম্পানি হিসেবে নতুন ই-টিআইএন নিয়েছে ৫৭ হাজার ৫৩৫টি; যা মোট কোম্পানির ৭০ শতাংশ। যেখানে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৭৭ হাজার ৮১৭, ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৭১ হাজার ১৯০, ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৫৪, ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৩৫ ও ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৫২ হাজার ৪৮০টি।

অন্যদিকে প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে ঢাকায় কোম্পানি রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৩০ হাজার ৮৯৪টি। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছর দাখিল হয়েছিল ২২ হাজার ৮৪৯টি ও ২০১৮-১৯ অর্থবছর ২২ হাজার ৬৪৪টি। রিটার্ন দাখিলের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কর অঞ্চল-১২। এ কর অঞ্চলে কোম্পানির রিটার্ন দাখিল প্রবৃদ্ধি ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরে রিটার্ন দাখিল প্রবৃদ্ধি প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) হিসাব মতে, ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৫৫টি। এর মধ্যে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তিন হাজার ৫৩২টি ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এক লাখ ৭৫ হাজার ৯৩২টি। আর এনবিআরের হিসাবে, লিমিটেড কোম্পানি এক লাখ ৭৬ হাজার ৪০০। এর মধ্যে ই-টিআইএন রয়েছে ৭৬ হাজার ও রিটার্ন দেয় ৩৫ হাজার। ৯৮ হাজার ৪০০ লিমিটেড কোম্পানি টিআইএন নেয়নি, রিটার্ন দেয় না। এসব কোম্পানি নিয়েই মূলত এনবিআরের টাস্কফোর্স কাজ করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সব কোম্পানি করের আওতায় এলে চলতি অর্থবছরে আয়কর আহরণ বাড়বে ৫০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা। আর আগামী অর্থবছর কর আহরণ বাড়বে দুই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে কর আহরণ সক্ষমতা বাড়ানো, শনাক্তকারী কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা, আর্থিক শৃঙ্খলা আনয়ন, করপোরেট প্রশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে করদাতা কোম্পানির ভুয়া অডিট রিপোর্ট বন্ধ করা। এছাড়া রয়েছে অডিট রিপোর্টের ডিভি কোড নিশ্চিত করা। 

আরএম/এনএফ