গত প্রায় চার মাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। এক সপ্তাহে ২/৫ টাকা কমে তো পরের সপ্তাহে যায় বেড়ে। কোররবানির ঈদ আর তীব্র গরমে ডিমের ওপর বাড়তি চাপ (চাহিদা) কিছুটা কমেছে, তবে কমেনি দাম। পাইকারিতেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা ডজন, খুচরা বাজারে যা দাঁড়াচ্ছে ১২৫ টাকায়। 

রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার অলি মিয়ারটেক বউ বাজারে ডিমের বাজার ঘুরে জানা যায় এই চিত্র।

স্থানীয় সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মুরগি ২৭০/২৮০ টাকা, গরুর মাংস ঈদের আগে ছিল ৭০০ টাকা। ডিমের দামও ৩/৪ মাস ধরে বাড়তি। সব কিছু নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৫ জুলাই ) সকালে সরেজমিনে বউ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতাদের অনেক ভিড়। কোরবানির প্রভাব এখনও বিদ্যমান। গরু ও খাসির মাংসের দোকান বন্ধ, তবে মুরগি ও ডিমের দোকান খোলা। 

ডিমের পাইকারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিম পাইকারি ১২০ টাকা বিক্রি করি। তবে ১০০ পিস নিলে ৯২০ টাকা। আর খুচরায় ১২৫ টাকা ডজন।   

আরও পড়ুন : ঈদের হাওয়ায় মাছের বাজার চড়া

চারমাস ধরে বাড়তি দাম, মানুষ তো ডিম কেনা কমিয়েছে, দামও কমে যাওয়ার কথা? জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, যতদিন ধরে ব্যবসা করি, এবারের চিত্রই শুধু ভিন্ন। কখনও এমন দেখিনি। বাড়তি দামে কিনছি। দাম বাড়ার কারণ আড়ৎদাররা ভালো বলতে পারবেন। তবে দাম বাড়তি থাকায় ডিমের ক্রেতা যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে নিজেদের লাভও।

বউ বাজারে ডিমের দামে অস্বস্তি প্রকাশ করে রিকশাচালক সেলিম মিয়া বলেন, গরীবের গরুর গোশতো হচ্ছে ডিম। সেটাও নাগালের বাইরে যাচ্ছে। ৯০ টাকা ডজনের ডিম এখন ১২৫ টাকা, ভাবা যায়! 

ডিমের দাম না কমলেও কোররবানির প্রভাবে কমেছে মুরগির দাম। মুরগি বিক্রেতা রাকিবুল ইসলাম বলেন, মুরগি (কক) ২৬০ টাকা, লেয়ার ২৭০ টাকা কেজি, ব্রয়লার কেজি ১৫০ টাকা।  

তিনি বলেন, ঈদের পর মুরগির দাম কমলেও গ্রাম থেকে দেশি মুরগি আসছে না। যে কারণে চাহিদা থাকলেও ‘সাপ্লাই’ দিতে পারছি না। 

মাছের বাজার ঘুরে জানা যায়, পাঙ্গাস মাছের কেজি  ১৪০/১৫০ টাকা, কই মাছ ১৮০, সিলভার ১২০, শরপুটি ১৮০, তেলাপিয়া ১৬০, চিংড়ি ৫২০-৫৬০ টাকা, আর রুই মাছ ২৮০-৩০০ টাকা কেজি।  

আরও পড়ুন : সেপ্টেম্বর থেকে বাড়ছে ওয়াসার পানির দাম

তবে শাকের দাম তুলনামূলক কম। ডাটা শাকের তিন আঁটি ১৬ টাকা, সবুজ ডাটা ৪ আঁটি ২০ টাকা, কলমি তিন আঁটি ২০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০, পুঁই শাক ২০ টাকা, কচু আঁটি ৫ টাকা।

শাক বিক্রেতা আবদুস সাত্তার বলেন, শাকের চাহিদা যেমন, সাপ্লাইও তেমন। দাম তুলনামূলক কম। টাটকা শাকের ক্রেতা বেড়েছে।

আল আমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমেছে। শাকের দামও কম। মুরগির দামও কেজিতে কমেছে ৩০/৪০ টাকা। কিন্তু ডিমের বাজার গরম। ১২৫ টাকায় এক ডজন ডিম কিনতে মন সায় দিচ্ছে না।

সবজির বাজার ঘুরে জানা যায়, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ৪০, করলা ৪০, ঢেড়স ৩৫, লাউ ৪০/৫০, চিচিঙ্গা ৩০, ধুন্দল ৩০, কাকরোল ৪০, শশা ৫০, মরিচ ৫০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি ২০/২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

জেইউ/এনএফ