বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে ভারতের জন্য পরীক্ষামূলক ট্রানজিট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

মোংলা-তামাবিল, তামাবিল-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-শেওলা ও চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার রুটে পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসনিকসহ অন্যান্য ফি ও চার্জ নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

১৪ জুলাই এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও চুক্তি বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. তারেক মাহমুদের সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

বুধবার (২০ জুলাই) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালের কাস্টমস অ্যাক্ট ও ২০২১ সালের কাস্টমস ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট বিধিমালায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি)’ শীর্ষক চুক্তি রয়েছে। 

ওই চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট গ্রুপ অব কাস্টমসের ১৩তম সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে পরিচালিতব্য চারটি পরীক্ষামূলক ট্রানজিট চালান-  মোংলা-তামাবিল, তামাবিল-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-শেওলা ও চট্টগ্রাম-বিবিরবাজার রুটে পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও অন্যান্য ফি ও চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিভিন্ন খাত অনুসারে ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি চালান প্রতি ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি টনপ্রতি ২০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ টনপ্রতি ১০০ টাকা, এসকর্ট চার্জ প্রতি টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি টন ১০০ টাকা, প্রতি কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি সংশ্লিষ্ট বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণে নির্ধারণ করা হয়েছে।

আদেশে আরও বলা হয়েছে, পণ্যের প্রেরক বা অনুমোদিত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট প্রবেশ কাস্টমস স্টেশনে উক্ত ফি ও চার্জ পরিশোধ করবেন। আর ওই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে আগামী আগস্ট মাসে চারটি পরীক্ষামূলক ট্রিপ (ট্রায়াল রান) পরিচালনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশও প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তিটির আওতায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করবে ভারত। এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধান দুই সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারত তার পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহন করার সুযোগ পাবে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে ভারতের দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রোটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিটিটি) বৈঠকে এ চুক্তি হয়। বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও ভারতের জাহাজ মন্ত্রণালয় এ চুক্তি করে। দুই দেশই বিশ্বাস করে এ চুক্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দুই দেশের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ। অথচ সম্ভাবনা প্রচুর। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতেই নদীকেন্দ্রিক বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারত বাংলাদেশকে ফি দেবে।  

আরএম/আরএইচ