সংকট স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির নয়। তাই সহজে এ সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না। সরকারের বর্তমান ব্যবস্থাগুলো বেশিরভাগই স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির। সংকট উতরাতে কার্যকরী পদক্ষেপ খুঁজে বের করতে হবে।

রোববার (২৪ জুলাই) ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ : কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।

ফাহমিদা বলেন, সংকট স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির নয়। সহজে এ সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না। বাংলাদেশ মাঝারি মেয়াদী সংকটে রয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থা অপ্রতুল। তাই স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী উভয় ধরনের ব্যবস্থা হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, সংকট সহজ হতে পারে, যদি স্বল্প থেকে মাঝারি মেয়াদের পরিকল্পনা নেওয়া যায়। সরকারের বর্তমান ব্যবস্থাগুলো বেশিরভাগই স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির। বর্তমানে মধ্যমেয়াদে ম্যাক্রো স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কঠোর ব্যবস্থার কার্যকরী উপকরণ খুঁজে বের করতে হবে, যা ম্যাক্রো স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

বিশ্বব্যাপী মাঝারি মেয়াদের জ্বালানি সংকট রয়েছে এমন মন্তব্য করে ফাহমিদা বলেন, বিশ্বব্যাপী মাঝারি মেয়াদের জ্বালানি সংকট রয়েছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে অনেকদিন। বাংলাদেশ অপরিশোধিত ও পরিশোধিত তেল এবং এলএনজি জ্বালানি আমদানিতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে। জ্বালানি আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক এবং দ্বিপাক্ষিক উৎস যেমন- সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতার থেকে ঋণ নিতে পারে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় আমাদের শুধু আমদানি করা এলএনজির ওপর নির্ভর করা কঠিন হবে। অভ্যন্তরীণ শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতের জন্য নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। অবিলম্বে পুরোনো গ্যাস অনুসন্ধান সাইটগুলোতে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যবস্থা প্রয়োজন। সরকারকে উপলব্ধি করা উচিত যে নবায়নযোগ্য শক্তি সংকটের সময় শক্তি বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

অস্বাভাবিক খাদ্য মুদ্রাস্ফীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিপিডি বলছে, সরকার ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির কথা বলছে। বাস্তবে মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেশি। বিশেষ করে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রকাশিত সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি হারের তুলনায় অনেক বেশি। নিত্য প্রয়োজনীয় এমন অনেক খাদ্যপণ্য রয়েছে যেগুলোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর আরও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।

আরএম/এমএইচএস