২০২২ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) পূর্বাভাস আবারও সংশোধন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছিল এ বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর এপ্রিলে তা কমিয়ে বলা হয় প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর আজ সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। 

উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে টেনে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আইএমএফ সতর্ক করে দিয়েছে যে চলমান পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তবে তা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিতে পারে। 

দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি কমার জন্য চীন এবং রাশিয়ার মন্দার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে পূর্বাভাস করা হয়েছিল সেখানেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২৩ সালের জন্য যেখানে ৩.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছিল, এখন তা কমিয়ে বলা হচ্ছে ২.৯ শতাংশ।  

আরও পড়ুন : বিশ্ববাজারে আবারও বেড়েছে গমের দাম

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি তলানিতে নামার পর ২০২১ সালে সেই মন্দা কাটিয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ৬.১ শতাংশ।  

আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়েরে-অলিভিয়ার গৌরিনশাস এক বিবৃতিতি বলেছেন, এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে। একটি মন্দার মাত্র দুই বছর পেরিয়ে আরকেটি মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। 

আইএমএফের এবারের প্রতিবেদনে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, যুদ্ধের কারণে জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতি  আরও বাড়বে এবং যা আবার কঠোর আর্থিক নীতি প্রয়োগের দিকে ঠেলে দেবে।  

উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ৬.৬ শতাংশে পৌঁছাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে আইএমএফের প্রতিবেদনে; এপ্রিলে যেখানে এর পূর্বাভাস করা হয়েছিল ৫.৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন : বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা 

গৌরিনশাস বিবৃতিতে বলছেন, বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য একটি সুস্পষ্ট ঝুঁকি নির্দেশ করে। 

করোনা মহামারির দরুণ চীনের বড় শহরগুলোতে লকডাউনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়া ও বৈশ্বিক সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটায় চীনের প্রবৃদ্ধিও ২০২২ সালে কমে দাঁড়াবে ৩.৩ শতাংশ। এপ্রিলে যেখানে আইএমএফের পূর্বাভাস ছিল ৪.৪ শতাংশ। 

ইউরোজোনের জন্যও একই ধরনের পূর্বাভাস দিয়ে আইএমএফ বলছে তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ২.৬ শতাংশ, এপ্রিলে বলা হয়েছিল ২.৮ শতাংশ।  

তবে পর্যটন খাতে ভালো পরিস্থিতি বিরাজ করায় ইতালির প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ধারার সম্ভাবনা দেখছে সংস্থাটি। তবে রুশ গ্যাস নিষেধাজ্ঞার কারণে ইতালি বড় রকমের মন্দার মুখে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। 

এনএফ