আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নানান উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে বিএনসিসি, স্কাউটকেও ভোটের কাজে নিয়োজিত করার পরিকল্পনা করছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইসি কর্মকর্তারা বলেন, ইতোমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এতে বেশ কিছু ধারায় সংযোজন আনা হচ্ছে। যেখানে শাস্তির বিধান নেই সেখানে বিধান যোগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে বাধা দেওয়া হলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হবে। এছাড়া পেশিশক্তির প্রভাব রোধ করতে যেকোনো সময় নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা চাচ্ছে ইসি। অন্যদিকে কারো প্রার্থিতা বাতিল হলে পুনরায় যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে বিধানও আনা হচ্ছে।

সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সুশৃঙ্খল রাখার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে আবশ্যিকভাবে এ যন্ত্রটি ব্যবহার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ইতোমধ্যে সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে সব পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

কর্মকর্তারা বলেন, সংসদ নির্বাচনে বিএনসিসি, স্কাউটদের নিয়োজিত করার ভাবনা এবং সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের পরিকল্পনা আগের কমিশনগুলো করেনি। এক্ষেত্রে আউয়াল কমিশন এগিয়ে থাকছে সবকিছুতেই। গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নিয়েই শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ করেছে। এরপর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও প্রযুক্তিবিদদের পরামর্শ নিয়েছে কমিশন।
 
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান গণমাধ্যমকে বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য আমরা সব বিষয় বিবেচনায় রাখছি। আমাদের ৪০ হাজরের বেশি ভোটকেন্দ্রে সংসদ নির্বাচন করতে হয়। এতে বিরাট সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজন পড়ে। যত সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন করার প্রয়োজন, ততটা করা যায় না। তাই আমরা বিএনসিসি, স্কাউটকেও ভোটের দায়িত্বে আনতে চাচ্ছি।

তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন এখনো বেশ দূরে রয়েছে। তবে আমরা কমিশনের সবাই একমত একটি অবাধ, ‍সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য। এজন্য এখন থেকেই নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা প্রয়োজনে নানা আইন সংশোধনেরও উদ্যোগ নেবো।

গত ১৭ থেকে ৩১ জুলাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও সংলাপ করেছে। এসব বৈঠকের আসা সুপারিশ পর্যালোচনা করে কমিশন সংসদ নির্বাচনের কৌশলপত্র তৈরি করবে। আর সেই কৌশলপত্র নিয়ে ফের সব অংশীজনের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। সেই সংলাপের পরই নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথমার্ধে। সেই হিসেবে এখানো প্রায় দেড় বছর সময় রয়েছে ইসির হাতে।

এসআর/এসএম