জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানোর জন্য সবাইকে কর দেওয়ার মানসিকতা পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের একটি দল সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 
 
সালমান এফ. রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজস্ব আহরণ অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ, তবে বাংলাদেশের জিডিপিতে করের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কম। জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানোর জন্য, সবাইকে কর দিতে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানান এবং এজন্য কর দেওয়ার মানসিকতা পরিবর্তনের ওপর জোর দেন তিনি।

তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বছর প্রায় ৫৫ হাজার নাগরিককে কর জালের আওতায় নিয়ে এসেছে। কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যমান রাজস্ব কাঠামো যুগোপযোগী করা এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার কার্যক্রম আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার ওপর জোর দেন তিনি।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্য যুদ্ধ, ব্রেক্সিট, স্বল্পন্নোত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং সর্বোপরি কোভিডের প্রভাবের কারণে দেশের বেসরকারিখাত বেশ প্রতিকূলতার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা নিতে হলে বাংলাদেশকে ২৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে, এমন বাস্তবতায় যথাসময়ে ইইউ-এর শর্তপূরণের কার্যক্রম তদারকি এবং ইইউ এর সঙ্গে যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় করতে একটি ‘ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি কমিটি’ প্রণয়নের প্রস্তাব করেন। 

ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, দেশে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাস এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিডা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করেছে, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। তবে এ সেবার কার্যকর প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থায় দক্ষ জনবল নিয়োগে জোর দেন তিনি।

তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বৈশ্বিক বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে এবং উল্লেখিত সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ অবস্থায় বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে তিনি সরকারের শিল্পনীতি, আমদানি-রপ্তানি নীতি, বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালাসহ সংশ্লিষ্ট সব নীতিমালার সমন্বয় খুবই জরুরি বলে মনে করেন। 

রিজওয়ান রাহমান বলেন, কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে মূলধনের সীমা ২৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কিছুটা যৌক্তিকীকরণ করা প্রয়োজন। যার  মাধ্যমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো একক মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন হতে আগ্রহী হবে এবং এর মাধ্যমে কর আহরণের সীমা আরও বাড়বে।

আরএম/জেডএস