বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, বর্তমান মহামন্দায় ইউরোপ থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিপাকে পড়েছে। এর ফলে পণমূল্য বৃদ্ধির কারণে অসহায় হয়েছে দরিদ্র মানুষেরা। বৈশ্বিক এ সংকট নিরসনে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদা তহবিল (আইএমএফ) চেষ্টা করে যাচ্ছে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির বার্ষিক সভার শেষ দিনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মানবতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলে দুর্ভিক্ষ এড়ানো সম্ভব। সব দেশকে উদার হতে হবে। নিত্যপণ্যের সরবরাহ সহজীকরণ করে দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এবারের বিশ্বব্যাংক আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন জুড়ে আলোচনার বিষয় ছিল বিশ্ব মন্দা ও খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা। বিশ্ব মন্দা আর দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে সহযোগী দেশগুলোর জন্য ১৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছে বিশ্বব্যাংক। যার মধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হবে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে। 

বিশ্বব্যাংক প্রধান মনে করেন, আসছে বছরের সংকট এড়াতে চাইলে সবাইকে মানবিক হতে হবে।

ডেভিড ম্যালপাস বলেন, এখন শুধু নিজের কথা ভাবলে চলবে না। আগামী দিনের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না চাইলে সবাইকে মানবিক হতে হবে। আমি বিশ্বজুড়ে ১৩০টি স্থানে কর্মরত আমার সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানাই। বিশ্ব সংকট মোকাবিলায় আমরা এক সঙ্গে কাজ করব।

ওয়াশিংটন ডিসির বার্ষিক সভায় বাংলাদেশও ছিল আলোচনার অংশ। করোনার পর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে ১৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জানান, চলমান সংকট উত্তরণে সামনের দিনগুলোতে বিশ্ব ব্যাংককে পাশে পাবে বাংলাদেশ।

এদিকে শেষ দিনে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্সি টেম্বন বলেন, করোনার আঘাত কাটিয়ে ওঠার আগেই আমাদের সামনে এখন খাদ্য সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, জ্বালানি সংকটসহ নানা সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাংক এমন একটি সংস্থা যার কাজই হলো সংকটে পাশে থাকা। বিশ্ব ব্যাংক সে চেষ্টা করছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিনা জর্জিয়েভা বলেন, বিশ্বে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা আমাদের কল্পনারও বাইরে ছিল। করোনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী একটা টালমাটাল অবস্থা তৈরি করেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সবক্ষেত্রে। কোভিডের সংকট থেকে উত্তরণ না হতেই খাদ্য, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি বিশ্ববাসীকে বিপাকে ফেলেছে। মানুষকে গরিব থেকে আরও গরিব করেছে। নিত্যপণের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি বিশ্ববাসীকে হতভম্ব করেছে। এই অবস্থা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে থমকে দিয়েছে।

এবারের সম্মেলনে ১৮৮ দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ব অর্থনীতির সংকট ও সমাধানের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৭ দিনের বৈশ্বিক সম্মেলন।

এসআর/জেএস