ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্য কার্যত সম্ভব নয়। যুদ্ধ ঘিরে বহু বৃত্তীয় বিশ্ব গড়ে উঠছে। বহু বৃত্তীয় বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে ওঠলে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে। দ্বি-পক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে কম মূল্যে খাদ্য-জ্বালানি ক্রয়ের অধিকার আমাদের রয়েছে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সমাজ গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত ‌‘রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ পথের শেষ কোথায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সমস্যা। এটি যৌক্তিক। কারণ বার্লিন ওয়ালে বলা হয়েছে, পূর্ব দিকে যাওয়া যাবে না। এ কারণে ইউক্রেন দখল করার তো প্রয়োজন নেই। দখল না করে কীভাবে সমাধান করা যায় সেটি বের করতে হবে রাশিয়াকে। ইউক্রেনের মধ্যেও বিভিন্ন মতামত থাকতে পারে। তাহলে তাদেরও মতামত দেওয়ার অধিকার আছে। বর্তমান অবস্থায় জেলেনেস্কি অসহায়। তাই তাকে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যুক্ত হতে হচ্ছে। আমেরিকার লক্ষ্য একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা কিন্তু সেটা হবে না। এটি হবে না বলেই তারা এখন বহু বৃত্তীয় বিশ্ব ব্যবস্থা আটকানোর জন্য এসব করছে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের জন্য বহু বৃত্তীয় বিশ্ব ব্যবস্থা হলে সুবিধা। নিষেধাজ্ঞাবিহীন মুক্ত বাজার হলে সুবিধা। আমরা যেখানে সুবিধা পাই সেখান থেকে ঋণ নেব। আইএমএফ ঋণ না দিলে ব্রিকস থেকে নেব। আমরা কারো পক্ষে যাব না। যদিও এটা কঠিন। তারপরও এই নীতি অনুসরণ করলে সংকটে পড়ার সম্ভাবনা কম।

সভাপতির বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা ভারতের মতো দেশের পক্ষে যতটা সহজ, আমাদের জন্য উল্টো। বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফ আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এমন ভয় রয়েছে। চীন-রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নির্ণয়ে বাংলাদেশকে আরও হিসেব কষে এগুতে হবে। 

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলীপ নাথ প্রকৌশলী ড. আবুল কাশেম প্রমুখ। 

আইবি/এসকেডি