ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় এসেছে তিন লাখ ৭১ হাজার ৯৩৪টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। যদিও তাদের মধ্যে ২ লাখ ৯০ হাজার ৮৯৯টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে থাকে। অর্থাৎ ৭৮ দশমিক ২১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিচ্ছে। তবে এখনো ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয় না।

বুধবার (২ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত তিন লাখ ৭১ হাজার ৯৩৪টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৯ প্রতিষ্ঠান অনলাইন প্ল্যাটফর্মে রিটার্ন দাখিল করে। সেই হিসাবে ৮৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে থাকে। আমাদের ধারণা, বছর শেষে অনলাইন ভ্যাট রিটার্নের হার ৮৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ধীরে ধীরে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম শক্তিশালী হচ্ছে। অটোমেশনই সব জটিলতা কমিয়ে দেবে বলে মনে করি। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার।

২০১৯ সালের জুলাই মাসে নতুন ভ্যাট আইন চালু হওয়ার পর ইলেকট্রনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ই-বিআইএন) নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। ওই নিবন্ধন ছাড়া ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়া যায় না। নিবন্ধন নিয়ে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যবাধকতার রয়েছে।

আরও পড়ুন: কম যায় না রূপসী বাংলাও, ভ্যাট ফাঁকি ১৮.৮৩ কোটি

বর্তমানে এনবিআরের অধীন সারা দেশে ভ্যাট কমিশনারেট অফিস রয়েছে ১২টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় পাঁচটি। রাজস্ব আদায় বাড়াতে নিবন্ধিত সব ভ্যাটযোগ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলক অনলাইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আগে প্রচলিত প্রথায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া হতো। যার অংক বা ডিজিট ছিল ১১। তিন বছর আগে অনলাইনে যে ভ্যাট নিবন্ধন চালু করা হয় তার ডিজিট ৯। এখন ৯ ডিজিটের নম্বরকে বলা হয় বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর বা ই-বিআইএন। মাসিক ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করতে হলে ৯ ডিজিটের ই-বিআইএন অবশ্যই উল্লেখে করতে হয়। তা না হলে রিটার্ন গ্রহণ করা হয় না। রিটার্নের ওপর ভিত্তি করেই ভ্যাট আদায় করা হয়। রিটার্নে প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বা লেনদেনের তথ্য উল্লেখ করা হয়।

নতুন ভ্যাট আইনে কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার কম হলে ভ্যাট দিতে হয় না। তাই তাদের নিবন্ধনও নেওয়ার দরকার নেই। তবে বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা হলে ৪ শতাংশ টার্নওভার কর দিতে হয়। বাকিদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ভ্যাটহার প্রযোজ্য। টার্নওভার কর ও নিয়মিত ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ই-বিআইএন নিতে হয়। কোনো প্রতিষ্ঠান ই-বিআইএন না নিলে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে নতুন ভ্যাট আইনে। এ ছাড়া নিবন্ধন সনদ যথাযথভাবে প্রদর্শন না করলেও ১০ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পুরোনো আইনের আওতায় সবমিলিয়ে সাড়ে আট লাখ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছিল। যাদের অধিকাংশই ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করত না বলে জানা গেছে।

আরএম/এমএ