শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র শিল্পের অগ্রগতিতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যদি তাদের ব্যবসা প্রসারিত করতে পারে তাহলে সেই সুবিধা আমরা সবাই ভোগ করতে পারব। ২০৪১ সালের উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। তাই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য আরও সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১০ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

আরও পড়ুন>>বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা

শিল্পমন্ত্রী বলেন, নারী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখছেন। উদ্যোক্তা বাড়ছে, তাদের ব্যবসার প্রসারতার বাড়ছে। অর্থনীতিতে তাদের আরও ভূমিকা রাখার জন্য তারা যেন স্বল্প সুদে, জামানতবিহীন ঋণ পায় তার ব্যবস্থা আরও করতে হবে। তাদের ব্যবসা প্রসারিত হলে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান বাড়বে। আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। ইতোমধ্যে গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা উদ্যোক্তারা।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, আজকে মূল ব্যবসায়ী যারা আছেন, সৎ ব্যবসায়ী যারা আছেন তারা টিকে থাকবে। অসৎ ব্যবসায়ীরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। যারা ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি ও মাঝারি থেকে বৃহৎ ব্যবসার দিকে যায় তাদের ব্যবসার প্রতি ভালোবাসা থাকে। এবং শ্রমিকদের প্রতিও একটা সুসম্পর্ক থাকে।

আরও পড়ুন>>ছোট উদ্যোক্তাদের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল

তিনি আরও বলেন, আগামীতে এসএমই মেলা জাতীয়ভাবে আরও বড় পরিসরে করা হবে। বর্তমান সরকার মালিক-শ্রমিকবান্ধব সরকার। আপনাদের উদ্যোগ যত বাড়াবেন, বিনিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে কর্মসংস্থানও তত বাড়বে। আপনাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিবে সরকার। আপনার এগিয়ে যান। বর্তমান সরকারের আমলে ব্যবসায়ীরা, উদ্যোক্তারা ভালো থাকে। ব্যবসায়ীক পরিবেশ পায়। কিন্তু অন্যরা থাকাকালে ব্যবসায়ীরা এমন ব্যবসায়ীক সুযোগ-সুবিধা পায়নি।

অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ২০২৭ সালের মধ্যে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসএমই ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এজন্য ফাউন্ডেশনের দক্ষতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। এজন্য ফাউন্ডেশনের জন্য নিয়মিত বাজেট দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এসএমই পণ্য প্রচারণার জন্য একটি ডিসপ্লে সেন্টার স্থাপন, একটি নিজস্ব ভবনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়, বিসিকসহ যেখানে খালি জায়গা রয়েছে সেখানে থেকে একটি জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>>ছোট উদ্যোক্তাদের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে এই মেলা। শতভাগ দেশীয় পণ্যের এই মেলায় উদ্যোক্তাদের জন্য মোট ৩৫০টি স্টল রয়েছে। এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছে ৬০ শতাংশ নারী এবং ৪০ শতাংশ পুরুষ।

মেলায় অংশ নিচ্ছে ফ্যাশন ডিজাইনিং, খাদ্য, কৃষি, হস্ত ও কারুশিল্প, চামড়াজাত, পাটজাত, আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া এ মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, নারী-উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, আইসিটি ও ক্লাস্টারের ওপর আয়োজন করা হবে ৫টি সেমিনার।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ফাউন্ডেশনের পরিচালক পর্ষদ সদস্য এনায়েত হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

এএসএস/এমএ