জুয়েলারি শিল্পে স্বর্ণ চোরাচালান বড় ধরনের সংকট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না, এর ফলে অর্থনৈতিক সংকটও বাড়ছে। তাই সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ মনিটরিং সেল গঠনসহ সাতটি প্রস্তাব দিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভায় প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়। স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ কার্যক্রম গ্রহণে চলমান বিষয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস। বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সভায় অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণের অলঙ্কার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা একবছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। তাই স্বর্ণ চোরাচালানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তারা। 

আরও পড়ুন>>সোনার দামে ভ্যাট-মজুরি, এনবিআরের পরামর্শ চায় বাজুস

বাজুসের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে—

>>স্বর্ণ চোরাচালান, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা।

>>চোরাকারবারিরা যাতে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা।

>>স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেমন বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের জোরালো অভিযান নিশ্চিত করা।

>>চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণে মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাগুলোর সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

>>ব্যাগেজ রুলের আওতায় স্বর্ণের বার ও অলঙ্কার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট, চোরাচালান এবং মানিলন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।

>>অবৈধ উপায়ে কোনো চোরাকারবারি যেন স্বর্ণের বার বা অলঙ্কার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

>>জল, স্থল ও আকাশ পথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যেন স্বর্ণের বার বা অলঙ্কার আনতে না পারে এজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আরও পড়ুন>>বাড়ল সোনার দাম, ভ‌রি ৮৩২৮১ টাকা

বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন ও সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার  আগারওয়ালা ছাড়াও বিএফআইইউয়ের উপ-প্রধান ও পরিচালকসহ ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

এসআই/কেএ