স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে জামিন অযোগ্য মামলা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। কঠোর আইনের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ কার্যক্রম গ্রহণে চলমান বিষয়ে এ সভা হয়। 

এসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন এবং সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএফআইইউয়ের উপ-প্রধান ও পরিচালকসহ ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।  

সভায় বাজুসের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে বলা হয়, জুয়েলারি শিল্পে স্বর্ণ চোরাচালান বড় ধরনের সংকট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না। চোরাচালানের ফলে অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে। আমরা ধারণা করছি প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণালংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। তাই চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ মনিটরিং সেল গঠনসহ ৭ প্রস্তাব দিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

বৈঠক শেষে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল’ এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন সাংবাদিকদের বলেন, বিএফআইইউ ও বাজুস একসঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায়, এজন্য এ বৈঠক হয়েছে।  বৈঠকে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ ও ব্যবসার বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছে। আগামীতে একসঙ্গে কাজ করব বলে একমত হয়েছি। আমরা আমাদের সদস্যদের স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করব।

বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, বাজুসের তালিকায় ৪০ হাজার ব্যবসায়ী রয়েছেন। আমরা বিএফআইইউকে এসব ডাটাবেজের তথ্য দেব। তারা তথ্য পর্যবেক্ষণ করবেন। তবে বাজুসের মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ চোরাচালান হয় তা বলতে পারেননি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এই নেতা।  

এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা বলেন, এখন পর্যন্ত বাজুসের কোনো সদস্য স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ হয়নি। আগামীতে যদি কোনো সদস্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

তিনি জানান, অবৈধভাবে আসা বা চোরাচালানের সময় জব্দ করা স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ দাবি আমাদের অনেক আগে থেকেই ছিল। আমরা চাই ডলার সংকটের এ সময়ের জব্দকৃত স্বর্ণের বার নিলামে বিক্রি করা হোক। এসব র’মেটারিয়াল আমাদের দেশের জন্য ভালো হবে, কারণ আমাদের এখানে বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারির মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আমরা চাই অবৈধভাবে স্বর্ণের বার আনা বন্ধ হোক, তাহলে চোরাচালানের মাধ্যমে যে মানিলন্ডারিং হচ্ছে তা অনেক কমে যাবে। 

বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস সভায় সভাপতিত্ব করেন। বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সভায় অংশগ্রহণ করেন।

এসআই/কেএ