বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানির সুবিধা দেওয়াসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন লিখিত সুপারিশ পড়ে শোনান।

সুপারিশগুলো হলো- অস্বাভাবিক কাগজের দাম বৃদ্ধির কারণ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, দ্রুততম সময়ে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিতে শুল্কমুক্ত ঘোষণা, দেশের সব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কাগজকে রিসাইকেলিং কাজে ব্যবহার করার ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক রাখা, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর গুদামজাত করা কাগজ স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা এবং শুল্ক হ্রাস/মুক্ত করা ছাড়াও অন্য ভর্তুকি বা প্রণোদনামূলক ছাড় দেওয়া।

লিখিত বক্তব্য ছোটন বলেন, মিল মালিক ও কাগজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কবলে দেশজুড়ে কাগজের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত এ সিন্ডিকেট দমন করে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানি করা না হলে আগামী বছর নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। একুশে বই মেলাসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতা তৈরি হবে। শিক্ষার্থীরা লেখার কাগজ পাবে না। এমনকি ডায়ারি-ক্যালেন্ডার ও কাগজের ব্যাগ তৈরির কাজও থমকে যাবে। 

তিনি বলেন, দেশের বাজারে মুদ্রণ এবং লেখার কাগজের সংকট তৈরি হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট চক্র এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কাগজের যে আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশে অতীতের যেকোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। এটি ভয়াভয় আকার ধারণ করেছে। আগামী বছরের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন বিঘ্ন ঘটবে, তেমনি ২০২৩ সালে অমর একুশে বই মেলায় বইয়ের দাম বেড়ে যাবে, প্রকাশকরা নতুন বই প্রকাশ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। 

তিনি আরও বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বেশি প্রভাব পড়েছে আমাদের কাগজের বাজারে। দেশের নানাবিধ প্রকাশনার মূল উপাদান এবং শিক্ষার প্রধান উপকরণ কাগজ। বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল পাল্প ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। যে পরিমাণে বেড়েছে তার চাইতে দুই থেকে আড়াই গুন বেশি দাম দেশের কাগজ মিলগুলো আদায় করছে। এতে করে দেশের শিক্ষাঙ্গন ও প্রকাশনা শিল্পকে বিপর্যের মুখে ফেলেছে। বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে গিয়ে সরকার বর্তমানে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনের সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল পাল্পের যে পরিমাণে দাম বেড়েছে তার চাইতে দুই থেকে আড়াই গুন দাম মিল ও কাগজ ব্যবসায়ীরা আদায় করছে। তাদের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। স্বল্প পরিমাণে পাল্প আমদানি করে কাগজের সংকট তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি করছে। 

তিনি বলেন, কাগজ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই তৈরি বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী বই মেলায় নতুন বই প্রকাশনা কমে যাবে, মূল্য বাড়বে। শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই, লেখার খাতাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য কাগজ পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানির ঘোষণা দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘোষণা দেওয়া হলে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে কাগজের দাম কমে যাবে বলে মনে করেন প্রকাশকরা।

এমএম/এসএম