জলবায়ু স্থিতিশীলতা, সেচযুক্ত কৃষি ও মৎস্য চাষের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশকে ১২ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ২০ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাংক মনে করে, এ অর্থের মাধ্যমে বাংলাদেশ খাদ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশ্বব্যাংকের এই ঋণ পরিশোধে নিম্ন আয়ের দেশের সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। বুধবার (১০ মার্চ) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জলবায়ু, স্মার্ট কৃষি ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং সেচ (এফসিডিআই) অবকাঠামো পুনর্বাসন ও আধুনিক করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ ও নিষ্কাশন সেবা উন্নত করতে সহায়তা করবে। যার ফলে বন্যায় ৬০ শতাংশ ফসলের ক্ষতি কমে আসবে। প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঝুঁকির মধ্যে থাকা এক লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মানুষের আয় বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। এর মধ্যে উপকারভোগীদের অর্ধেকই নারীরা থাকবেন বলে জানায় সংস্থাটি।

বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের বেশি কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মের্সি টেম্বন বলেছেন, এ প্রকল্পে জলবায়ু-নির্ভরশীল পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি পাবে। জীবিকা রক্ষায় সহায়ক হবে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি তৈরি করবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পটি পুনর্বাসনের জন্য দরিদ্র ও জলবায়ু পরিবর্তনে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে ১৯টি এফসিআই প্রকল্প চিহ্নিত করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের জলবায়ু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, স্মার্ট প্রযুক্তি, নতুন ফসলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ফসল কাটার বিষয়ে প্রশিক্ষণও দিবে। 

তিনি আরো বলেন, প্রকল্পের আলোকে ধান ও মাছ/চিংড়ি একত্রে চাষ করার মাধ্যমে উপকূলীয় জলজ চাষ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি, স্থানীয় বাজার উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে। এটি মৎস্য উৎপাদনে প্রায় ৪০ শতাংশ ও চালের ৭.৫ শতাংশ বাড়াতে সাহায্য করবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র কৃষি বিশেষজ্ঞ ও টাস্ক দলের নেতা আবেল লুফা বলেন, কৃষিক্ষেত্র ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নির্বাচিত প্রকল্পগুলোর মেরামত ও আপগ্রেড করার ফলে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে পানি ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা বাড়বে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের এই ঋণ পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৫ বছরের মেয়াদ পরিশোধ করতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে চলমান বৃহত্তম আইডিএ প্রোগ্রাম রয়েছে মোট ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সমর্থনকারী প্রথম বিকাশের অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে ৩৩.৫ বিলিয়ন ডলার অনুদান ও সুদমুক্ত অর্থের ছাড়পত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

এসআর/ওএফ