১৩৬ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এমজিএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সহযোগী হিসেবে পরিচিত আনিস আহমেদ গোর্কির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদক উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি আনিস আহমেদ নিয়মিত আয়কর দাতা হলেও উল্লিখিত মোট আয়ের মধ্যে ২০২০-২০২১ কর বর্ষের আয়কর নথিতে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১৯এএএএএ ধারায় ১৩৬ কোটি ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকা বিনিয়োগ হিসাবে প্রদর্শন করেন। কিন্তু আসামি আনিস আহমেদ বিনিয়োগ হিসাবে প্রদর্শিত অর্থের স্বপক্ষে সন্তোষজনক কোনো রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি।  অনুসন্ধানকালে তার উল্লেখিত আয়ের উৎসের স্বপক্ষে সন্তোষজনক কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার অপচেষ্টা করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।

আরও পড়ুন : মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ মামলার চার্জশিট

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি আনিস আহমেদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার নামে অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব প্রদানের জন্য আদেশ জারি করা হয়। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামি আনিস আহমেদ ২০০৮-২০০৯ থেকে ২০২১-২০২২ কর বর্ষে আয়ের বিভিন্ন উৎসের মধ্যে ২০২০-২১ কর বর্ষে ১৩৬ কোটি ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকা আয়ের তথ্য প্রদান করেন। 

অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যক্তি স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া ও দুদকের চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রমের অভিযোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি বিনিয়োগ হিসাবে অর্থ প্রদর্শন করেছেন। দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। বিধায় তার বিরুদ্ধে বর্ণিত অপরাধের দায়ে উপর্যুক্ত ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়। 

আরও পড়ুন : রন হক সিকদারদের অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তের আদেশ আপাতত বহাল

প্রসঙ্গত, অর্থ আইন ২০২০ (সংশোধিত ২০২১) অনুযায়ী আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১৯এএএএএ ধারায় রিটার্ন অথবা সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের তারিখে অথবা তার পূর্বে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর অধীন কর ফাঁকির অভিযোগে কোনো কার্যধারা বা অন্য কোনো আইনের অধীন আর্থিক বিষয়ে কোনো কার্যধারা চালু হলে এ ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে না। কমিশন ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালু করার পর ওই আইনে সুবিধা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এমজিএইচ গ্রুপের সিইও আনিস আহমেদ ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের একজন পরিচালক। জাহাজে পণ্য পরিবহন, খুচরা বিপণন, এয়ারলাইন্স রিজার্ভেশন, রিয়েল এস্টেট, পোশাক, চা ও রাবার প্ল্যান্টেশন, অটোমোবাইল, ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে এমজিএইচ গ্রুপের ব্যবসা রয়েছে।

আরএম/এসকেডি