আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সাপ্লাই-চেইন নিরবচ্ছিন্ন ও মূল্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে আমদানিকারকদের বিশেষ কর সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে ডিসিসিআইর নব-নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎকালে সংগঠনটির সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এ দাবি জানিয়েছেন।

এ সময় ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সাপ্লাই-চেইন নিরবচ্ছিন্ন থাকা প্রয়োজন, যেন সাধারণ মানুষ সহনীয় মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে সক্ষম হয়। পণ্যের মূল্য সহনীয় ও সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রমজান মাসে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারকদের কর সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা হতে বঞ্চিত হবে। অনেক উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিতে ৮ থেকে ১৬ শতাংশ হারে শুল্ক প্রদান করতে হবে। 

এ অবস্থায় রপ্তানির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর, প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার এবং স্থানীয় শিল্প খাতের প্রস্তুতিতে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ জোর দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের রপ্তানির বাজার অধিক মাত্রায় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকায় নতুন নতুন বাজারে পণ্য রপ্তানিতে আরও বেশি নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে এলডিসি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে রপ্তানি সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। ২০২৬ সালের পর বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পণ্য আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক হার হ্রাস করা প্রয়োজন, কারণ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের এ হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে ডিসিসিআই সভাপতি একটি পৃথক ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ গঠনের প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে দ্রুত সময়ে বাণিজ্যবিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে এবং ‘আরবিট্রেশন অ্যাক্ট ২০০১’-এর প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাবও করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তিন বছর পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা পাওয়া গেলে, আমাদের রপ্তানি সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশ ও আঞ্চলিক ব্লকগুলোর সঙ্গে এফটিএ, পিটিএ ও সেপাসহ অন্যান্য চুক্তি স্বাক্ষরের উপর আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করতে হবে। বর্তমান সরকার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে।

মন্ত্রী বলেন, কৃষি ও খাদ্য পণ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং আমাদের ‘কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত’ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। যেখানে স্পেনসহ বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং আশা করা যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে এ খাতে আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হব। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, ১ ইঞ্চি জমিও অনাবাদী না রেখে কৃষি কাজের আওতায় নিয়ে আসার উপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা এখনও কাজে লাগানো যায়নি, আমাদের এর উপর আরও অধিক হারে জোরারোপ করতে হবে।  

আরএম/এসকেডি