রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসর আজ মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে। বিকেল ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাণিজ্য মেলার পর্দা নামবে।

ব্যবসায়ীদের আবেদন ছিল সময় বাড়ানোর কিন্তু নির্ধারিত সময়েই মেলা শেষ করছে আয়োজক সংস্থা।

মেলার শুরুতে ভিড় কম থাকলেও শেষের দিকে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সমাগম জনস্রোতে রূপ নেয়। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না প্রতিটি স্টল-প্যাভিলিয়নে।

মেলায় ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল গৃহস্থালি বিভিন্ন পণ্যের দিকে। এর মধ্যে প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থালির পাশাপাশি রয়েছে প্রেসার কুকার, ওভেন, রাইস কুকার, জুস মেকার, জুস ব্লেন্ডার, ইস্ত্রি, ইন্ডাকশন চুলা, ফ্যানসহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য। শেষ মুহূর্তে পণ্য বিক্রি করতে ও ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিয়েছেন বিক্রেতারা। পাশাপাশি রাখা হয়েছে নানা উপহার।

আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেলায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি আগের বারের চেয়ে বেশি ছিল। বলতে পারি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আগমন হয়েছে। মেলার শুরুতে ভিড় কম থাকলেও শেষের দিকে দর্শনার্থী অনেক ছিল। বিশেষ করে শেষ সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে মেলায় প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে।

ব্যবসায়ীদের সময় বাড়ানোর আবেদন ছিল। যেহেতু নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু হয়েছে, তাই সময় বাড়ানো হয়নি জানিয়ে ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আজ বিকেল ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠান হবে। এতে প্রধান অতিথি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন। অনুষ্ঠানে মেলার বেচাবিক্রি বিদেশি ক্রয়াদেশসহ বিভিন্ন বিষয় অবস্থা তুলে ধরা হবে।

তবে মেলার প্রবেশপথ বা গেটের ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান আবদুল্লাহ অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী স্থানীয় রূপগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এবার মেলায় মোটামুটি দর্শনার্থী ছিল। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী দর্শনার্থী আসেনি। একই কথা জানিয়েছেন অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, শেষ সময়ে কিছুটা বেচাবিক্রি হলেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তাই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন তারা।

গত ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি ঢাকার ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রাঙ্গণ মেলার জন্য জায়গা নির্ধারিত হয়েছে।

এবারের বাণিজ্য মেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলে। মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৩১ টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন অংশ নেয়।

এসআই/এসএসএইচ/