রেমিট্যান্সের পর এবার স্বস্তি দিচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্য। বিশ্বমন্দার মধ্যে জানুয়ারি মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন (ইউএস) ডলার। যা শতকরা হিসাবে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির সূত্র মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ইউএস ডলার।

আরও পড়ুন>>২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ৬৭ বিলিয়ন ডলার

এর আগে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে যা হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। শতাংশের হিসাবে ২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

২০২২ সালের তুলনায় রপ্তানি আয় বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ১০ শতাংশ কমেছে রপ্তানি আয়। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আর রপ্তানি হয়েছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

ফলে চলতি অর্থ বছরে জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট সাতমাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২৪৪৭ দশমিক ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২৯৫৪৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮৯৮ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় বেড়েছে। যা শতাংশের হিসাবে আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।

আরও পড়ুন>>ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানিতে রেকর্ড আয়

খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই থেকে জানুয়ারি এই সাত মাসে দুই হাজার ৭৪১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। একইভাবে চামড়াজাত পণ্যে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ ও প্লাস্টিক পণ্যে ৪০ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

আর গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার কৃষিপণ্য ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, হিমায়িত মাছে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ, হস্তশিল্পে ৩৪ দশমিক ১০ শতাংশ, পাটজাত পণ্য ২১ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কাঁচ পণ্যের রপ্তানি ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই সময়ের মধ্যে আমাদের সামগ্রিক পোশাক রপ্তানি ২৩.৯৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৪.৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি ১৪.৯৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যখন ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১২.৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। উভয় ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ১২.৭০ শতাংশ এবং ১৬.৩০ শতাংশ। তাই ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি নিটওয়্যারের তুলনায় বেশি হয়েছে।

আরও পড়ুন>>লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়েছে রপ্তানি আয়
 
তিনি বলেন, যদি আমরা একক মাস বিবেচনা করি, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আমাদের রপ্তানি আয় ছিল ৪.৪২ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২২ সালের একই মাসের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.২৪ শতাংশ। 

বিজিএমইএ পরিচালক বলেন, যদিও আমরা গত কয়েক মাস ধরে চার বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রপ্তানি আয় বজায় রাখছি। এই শক্তিশালী পারফরম্যান্সের পেছনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৩ সালে মন্দার ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং বিশ্ব দুর্বল প্রবৃদ্ধি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির একটি প্রলম্বিত সময়ের মধ্যে প্রবেশ করছে। আমাদের বেশিরভাগ কারখানায় নতুন অর্ডারও কমে গেছে। তাই ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের নজিরবিহীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

এমআই/কেএ