যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হলেও গত বছর দেশ দুটির মধ্যে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বাণিজ্য হয়েছে।  

পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ২০২২ সালে দেশ দুটির মধ্যে ৬৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা বেলুনের ইস্যুতে সম্প্রতি দেশ দুটির সম্পর্ক অবনতি হয়েছে। তবে এই বেলুন গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে যুক্তরাষ্ট্র যে দাবি করছে, চীন তা নাকচ করেছে। 

বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির এ দুই দেশ ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্য যুদ্ধেও লিপ্ত।  

নতুন পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন ক্রেতারা চীনে তৈরি খেলনা এবং মোবাইল ফোনের মতো পণ্যের পেছনে তাদের ব্যয় বৃদ্ধি করায় গতবছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। একই সময়ে চীনে মার্কিন রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।  

আরও পড়ুন : বেলুন ধ্বংসে ক্ষুব্ধ চীন, ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার ঘোষণা

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টির ভূমিকা থাকলেও এ পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, বছরের পর বছর ধরে বাণিজ্য দ্বন্দ্ব চালিয়ে আসা দেশ দুটি একে অন্যের ওপর কতটা নির্ভরশীল।  

যুক্তরাষ্ট্রে দশকের পর দশক ধরে চলে আসা ক্রমবর্ধমান চীনা পণ্য আমদানির ওপর ২০১৮ সালে শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। সে সময় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। জবাবে চীন ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে।  

জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দুই বছর পরও এগুলো বহাল ছিল। 

এই মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের চীন সফরে যাওয়ার কথা ছিল; যাকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। 

মার্কিন এই শীর্ষ কূটনীতিকের নিরাপত্তা, তাইওয়ান এবং কোভিডসহ আরও নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য ৫ থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি বেইজিং সফরে যাওয়ার কথা ছিল।  

তবে, হঠাৎ করে বেলনু ইস্যুতে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর এই সফর পিছিয়ে যায়।   
 
চীনা কর্মকর্তারা বারবারই বলে আসছেন যে এয়ারশিপটি বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সেটির ঢুকে পড়া স্রেফ একটা দুর্ঘটনা।  

মঙ্গলবার স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি চীনা বেলুন নিয়ে কোনো কথা না বললেও এ কথা বলেন যে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তার প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত। 

তিনি আরও বলেন, চীন যদি মার্কিন স্বার্থকে এগিয়ে নিতে পারে, তবে আমি চীনের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে কোনো ভুল করা যাবে না: যেমনটি আমরা গত সপ্তাহে স্পষ্ট করে দিয়েছি, চীন যদি আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়, তাহলে আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য কাজ করব, যা আমরা অতীতেও করেছি। 

সূত্র : বিবিসি।  

এনএফ