লোকাল ইন্ডাস্ট্রিকে সুরক্ষা দিতে গিয়ে বাড়তি ভ্যাটের ফলে ল্যাপটপের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। লোকাল ইন্ডাস্ট্রি কোয়ালিটি পণ্য উৎপাদন করতে পারেনি। আগে যেখানে ২৫-৩০ হাজার টাকায় ল্যাপটপ পাওয়া যেত এখন ৫০ হাজার টাকার নিচে কোনো ল্যাপটপ মেলে না।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হয়।

এ কারণে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ল্যাপটপ আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির সভাপতি ইঞ্জি. সুব্রত সরকার বলেন, ইউরোপে যুদ্ধে টালমাটাল অর্থনীতির মধ্যেও গত বছর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর হয়েছে। বাড়তি ভ্যাটের কারণে ল্যাপটপের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। লোকাল ইন্ডাস্ট্রি কোয়ালিটি পণ্য উৎপাদন করতে পারেনি। আগে যেখানে ২৫-৩০ হাজার টাকায় ল্যাপটপ দিতে পারতাম এখন আর ৫০ হাজার টাকার নিচে কোন ল্যাপটপ দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, দেশীয় উৎপাদকদের উৎসাহিত করতে ল্যাপটপ আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলেও নতুন করে ল্যাপটপ উৎপাদনের উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডসমূহ এই বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। প্রায় ২৫ ডলারের দাম বাড়া ও ভ্যাটের কারণে ল্যাপটপের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে নিম্নমানের ল্যাপটপ বাজারজাত হচ্ছে, প্রচুর রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এ সময় সংগঠনটি তথ্য প্রযুক্তির প্রায় সকল পণ্যের আমদানি পর্যায়ে এআইটি ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

প্রাক বাজেট আলোচনায় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেকের সভাপতিত্বে ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টয় মার্চেন্টস ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা চেয়েছে।

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তাদের প্রস্তাবে বলেছে, মোবাইল কারখানাগুলোকে কিছু শুল্ক ও মূসক সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসবের কার্যকারিতা এ বছর শেষ হয়ে যাবে। অথচ চীন ও ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে দেখা যায় কারখানাগুলোর পূর্ণ সক্ষমতা তৈরি হতে আরও বেশি সময় লাগে। তাই শুল্ক ও মূসক এর সংশ্লিষ্ট এসআরওগুলোর সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করছি।

অন্যদিকে জাতীয় তথ্য প্রযুক্তি নীতিমালা অনুযায়ী সফটওয়্যার ও আইটিএস খাতের কর ২০৩০ সাল পর্যন্ত বহাল রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিসেসের (বেসিস)।

সংগঠনটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে মেধা পাচার রোধে সফটওয়্যার ও আইটি খাতের পেশাজীবীদের উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়ের উপর আয়কর রেয়াত প্রদান, স্থানীয় সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার উপর মূসক সম্পূর্ণ  তুলে দেওয়া, ডিজিটাল সিকিউরিটি পণ্যের উচ্চ শুল্ক হ্রাস করে শূন্য শতাংশ করা ইত্যাদি।

এছাড়া সফটওয়্যার এবং তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা রপ্তানিতে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হয়। ওই হার ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বেসিস।

আরএম/এসকেডি