ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুরে দেশের বৃহত্তর কাপড়ের পাইকারি বাজারে বইছে বেচাকেনার ধুম। সালোয়ার কামিজ, থ্রি পিস, পাঞ্জাবি, শাড়ি, লুঙ্গি ও বোরকার নানান ডিজাইনের কাপড় পাওয়া যায় এখানে। রয়েছে দেশি-বিদেশি খ্যাত-অখ্যাত ব্র্যান্ডের কাপড়ও। তাই ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ইসলামপুর এখন জমজমাট।

আরও পড়ুন>>এ বছর ৩ বছরের মুনাফা করতে চান ব্যবসায়ীরা

এখানকার দোকানগুলোতে রয়েছে ছাপা শাড়ি, কম্পিউটারে ডিজাইন করা শাড়ি, হাতে রঙ করা শাড়ি, বোরকা, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি সহ নানান ডিজাইনের থ্রি পিস। ইসলামপুরে পোশাকের দোকানগুলোতে মান ও কাজ ভেদে ৬৫০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকায় মিলছে দেশি থ্রি পিস। সেলাই ছাড়া থ্রি পিস মিলছে ৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। নানা কারুকাজ ও বাহারি রঙের পাঞ্জাবি নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত। 

ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে নিবন্ধন করা প্রায় সাড়ে চার হাজার দোকানসহ অনিবন্ধিত আরও তিন হাজার দোকানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য চলে এখানে। কিন্তু ঈদকে ঘিরে তা শত কোটি টাকায় রূপ নেয় বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা। 

আরও পড়ুন>>দেশীয় পোশাকেও বাড়তি খরচের খড়গ

এবারের বিক্রি কেমন? এমন প্রশ্নে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। কেউ বললেন, এবার বিক্রি ভালো, তবে মোটা দাগে নয়। আবার কেউ বললেন, সন্তোষজনক নয়। 

দেশি-বিদেশি কাপড়ের বাজার দর কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীরা বলেন, এবার দেশি-বিদেশি উভয় কাপড়ের বাজার দর গত বছরের তুলনায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি। কাপড়ের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও এলসি খুলতে না পারার কারণেই এবারের কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। 

আরও পড়ুন>>বৈচিত্র্যময় পোশাকের সংগ্রহ নিয়ে ‘সারা’র ঈদ আয়োজন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) টং মার্কেট, হাজি শরফুদ্দিন ম্যানশন, হাজি ইউসুফ ম্যানশন, আমানউল্লাহ কমপ্লেক্স, হাজি কে হাবিবুল্লাহ কমপ্লেক্স মার্কেট, লতিফ টাওয়ার, আহসান মঞ্জিল (মিউ.) সুপার মার্কেট, এ মাবুদ রাইন টাওয়ার, লায়ন টাওয়ার, মদিনা ভবন, হাজি শামসুদ্দিন ম্যানশন, ২৪ নম্বর মসজিদ মার্কেট নুরজাহান ম্যানশন, হালিম প্লাজা ও সোনার বাংলা মার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকান বাহারি পোশাকে সুসজ্জিত। দোকানগুলোতে দারুণ বেচাকেনা চলছে। মোড়ে মোড়ে চলছে মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ। 

টেক্সটাইল ওয়্যান্স উইমেন্সের ম্যানেজার রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে ভারত ও চীনের কাপড়ের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ, কাপড়ের রঙের দাম বাড়ার কারণে দেশি কাপড়ের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তাই প্রতিটি কাপড়ের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পেলেও এ বছর বিক্রি মোটামুটি ভালো। আশা করি আগামী ২০ রমজান পর্যন্ত আমাদের বেচাকেনা ভালো চলবে।

আরও পড়ুন>>ঈদের কেনাকাটায় কার্ডে ছাড়ের হিড়িক

বরিশাল থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সারাবছর ইসলামপুর থেকেই পাইকারি দরে কাপড় কিনি। যেহেতু সামনে ঈদ তাই রমজানের শুরুতেই কিছু কাপড় কিনলে মোটামুটি ভিড় কম থাকে। 

এমএল/কেএ