মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি পাদুকা ও ডেইরি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

রোববার (২১ মার্চ)  বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এ আহ্বান জানান। 

এসময় ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, গত ১০ বছরে দুদেশের বাণিজ্য ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৭ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি ও রফতানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন এবং ৫ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ প্রধানত তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের পণ্য সবচেয়ে বেশি রফতানি করে থাকে। তবে সাম্প্রাতিক সময়ে পাদুকা, চামড়া, মাছ, ফার্নিচার, ওষুধ, প্লাস্টিক, খেলনা, সিরামিক ও কৃষিজাত পণ্য রফতানি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ সূতা, রড, স্টিল, বয়লার এবং ওয়েল সিড প্রভৃতি পণ্য আমদানি করে থাকে।

শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের রফতানিকারকরা পণ্য জাহাজীকরণের ক্ষেত্রে ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ শুল্ক প্রদান করে, যেটি যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য রফতানিকারকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ ধরনের উচ্চ শুল্ক হার আমাদের তৈরি পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়নকে ব্যাহত করছে এবং আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছি। 

রিজওয়ান রাহমান মার্কিন বিনিয়োগকারীদের তৈরি পোশাক, মেডিকেল যন্ত্রপাতি, অটোমোবাইল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রস্তাব করেন। সাক্ষাৎকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে দেশের সব জনগণকে অভিনন্দন জানান। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, জন্মগতভাবেই বাংলাদেশিরা অত্যন্ত উদ্যমী ও সাহসী। এ দেশের উদ্যোক্তাদের সাহসী মনোভাব সামনের দিনগুলোতে বহির্বিশ্বে বাণিজ্য ও পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। 

তিনি জানান, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে শিগগিরই ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ চালু করা হবে, যার মাধ্যমে মার্কিন উদ্যোক্তাদের নিকট এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশের কৃষি, পর্যটন ও ইকো-ট্যুরিজম, সমুদ্র অর্থনীতি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও অটোমোবাইল খাত বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাইডেন সরকারের সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে।

ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, মার্কিন দূতাবাসের ইকোনোমিক অ্যান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ইউনিট চিফ জন ডি. ডানহাম এবং ইউএসএআইডি-এর ইকোনোমিক গ্রোথ অফিস-এর পরিচালক জন স্মিথ শ্রীন।

আরএম/আরএইচ