শেষ সময়ে আতর টুপি জায়নামাজ কিনতে ভিড়
দেশের আকাশে শুক্রবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। শনিবার সারাদেশে পালিত হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের সামনে রেখে কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল সব শ্রেণির মানুষ। শেষ মুহূর্তে এখন ভিড় করছেন টুপি, জায়নামাজ, তসবিহ, আর আতরের দোকানে। বেচাকেনা চলবে ঈদের নামাজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেট, পল্টন, মৌচাক মার্কেট, কাকরাইল মসজিদ মার্কেটসহ ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে এসব পণ্য।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট এবং মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেট জিপিও সংলগ্ন আশপাশের ফুটপাথ ঘুরে দেখা গেছে, শতাধিক দোকানে টুপি-জায়নামাজ, তসবিহ, মেসওয়াক, আতর-সুর্মার পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে টুপি–আতর বিক্রি করছেন ইয়াসিন। তার সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে গত দুই বছর দোকানপাট বন্ধ ছিল, তাই ব্যবসা হয়নি। এবার আশা ছিল, ভালো বেচাকেনা হবে। ধার করে আতর টুপি তুলেছেন। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী বেচা-বিক্রি হচ্ছে না। অন্যান্য ঈদের সময় যে বেচাকেনা হয়, এবার সে রকম হয়নি।
বিজ্ঞাপন
ইয়াসিন জানান, কাল ঈদ অথচ টুপি বিক্রি সেই অর্থে হয়নি। জুমাতুল বিদার দিনে এত মানুষ এলো, এখন পর্যন্ত ২০টি টুপিও বিক্রি করতে পারিনি। ব্যবসার কী অবস্থা এটা দেখলেই বুঝতে পারবেন।
ইয়াসিনের মতো অবস্থা অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও। তারা বলছেন, আতর, টুপি সারা বছর বিক্রি হয়। প্রায় ৮০ ভাগ বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। করোনার কারণে গত দুই বছর ব্যবসা হয়নি। এবারও বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না। তাও বিক্রি খুব কম। ভালো বিক্রি না হওয়ায় মন ভালো নেই বিক্রেতাদের।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে টুপি বিক্রি হচ্ছে। বড়দের-ছোটদের টুপির দাম ৫০টাকা, সুতি টুপি ২০ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ডিজাইনের ১০০ থেকে এক হাজার টাকায়ও টুপি বিক্রি হচ্ছে।
ধনী বা গরিব সবার জন্য রয়েছে নানা দামের আতর। যার নামেও রয়েছে বৈচিত্র্য। আগর, হাটকরা উদ, মেশক আম্বার, রোজ আইটেম, জান্নাতুল ফেরদৌস বিভিন্ন নামের আতর। বিভিন্ন ধরনের এসব আতর বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বায়তুল মোকাররমে এক তোলা আতর সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট বোতল পড়ছে ২০ হাজার টাকা। দুবাইয়ে তৈরি আতরটির নাম উদে কাসাস। এছাড়া সৌদি আরবের মারিয়াম আতরের দামও পাঁচ হাজার টাকা।
ফুটপাত বা মসজিদের সামনে যেসব দোকান বসেছে তাদের কাছে ৫০ টাকা থেকে শুরু ১৫০ টাকায় আতর পাওয়া যাচ্ছে। বেলি, গোলাপ, রজনীগন্ধা, অরেঞ্জ ঘ্রাণের আতর ৫০ টাকা করে রাখা হচ্ছে। ম্যাগনেট ১২০ টাকা, ক্লুল ওয়াটার ১০০ থেকে ১২০।
ফুটপাতের আতর টুপি বিক্রেতা আরিফ জানান, সারা বছরের তুলনায় রমজানে আতর টুপির বিক্রি বেশি হয়। গত দুদিন ধরে বিক্রি ভালো হচ্ছে। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বেচাবিক্রি হবে। ৩০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দামে আতর বিক্রি করছি।
আতর টুপির সঙ্গে তসবিও বিক্রি হচ্ছে। ৩০, ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা ফুটপাতে। আর দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিভিন্ন ডিজাইনের তসবি।
টুপি কিনতে আসা আবির হোসেন জানান, ঈদের সব ধরনের কেনাকাটা শেষ হয়েছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়েছি। এখন টুপি কিনলাম, ১২০ টাকা নিল।
এসআই/এনআই/এসকেডি