বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস না এলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এশিয়ার টাইগার হতো বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, তারপরও এ ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নিয়ে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।

বুধবার (২৪ মার্চ) অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক সূচক কতদূর এগিয়েছে? — জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্ব অর্থনীতির সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮০তম। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থায় আমাদের গণনায় নিতো না। নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য করতো। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর অর্থনীতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে গেছে। করোনা না এলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমরা অর্থনীতিতে এশিয়ার টাইগার হতাম।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা শীর্ষ ৫০ অর্থনীতির সূচককে অগ্রাধিকার দেয়। আমরা সেই জায়গায় না থাকার কারণে নানা ধরনের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। তারা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা করতে। আমরা দায়িত্বগ্রহণ করার পর সেই অর্থনীতি এখন ৪১তম অবস্থানে। এরমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটি বর্তমান সরকারের কৃতিত্ব।

আসন্ন বাজেটে কালো তালিকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হবে কি না— এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা আগে বলা যাবে না। তার জন্য জাতীয় সংসদের বাজেট উত্থাপন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

রিজার্ভ থেকে পায়রা বন্দরে অর্থায়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল জানান, বিদেশি অর্থায়নে এসব বড় প্রকল্প করলে ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এ কারণে আমরা এখানে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। আমাদের এখন রিজার্ভ ভালো। যেহেতু এটি সরকারের প্রকল্প, সেহেতু টাকা ব্যয় হবে সরকারি খাতে। তাতে সমস্যার কিছু নেই। কারণ এক হাতের টাকা অন্য হাতে যাচ্ছে। এটাকে আমি পজিটিভ হিসেবে দেখি।

বেসরকারি খাত রিজার্ভ থেকে ঋণ নিতে পারবে না কি না— এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকায় আপাতত সরকারই ঋণ নিতে পারবে। তারপরও এটা পরে জানানো হবে।

বুধবারের সভায় অর্থনীতি সম্পর্কিত-কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য ৬টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয়ের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৩টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ১টি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। এ ৬টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি হতে ব্যয় হবে ৯৫৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯১৬ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য (এডিবি, এএফডি ও ইআইবি ঋণ) ৫৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫ হাজার ৮৫৭ টাকা নেওয়া হবে।
 
এনএম/এসএম/এমএমজে