শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। পাশাপাশি কল-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর গুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার (৩ জুন) এফবিসিসিআই-এর বোর্ড রুমে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রয়োজনে যাতায়াত খাতের বরাদ্দ করা অর্থ থেকে কিছুটা কাটছাঁট করে হলেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার বলে মন্তব্য করেন মো. জসিম উদ্দিন। এসময় নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিয়ে এর কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করার আহ্বানও জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে হবে। আর এজন্য সাশ্রয়ী এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের বিকল্প নেই। বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেবে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়া হবে ব্যাংক খাত থেকে। যা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এমন অবস্থায় ব্যাংক খাতের পরিবর্তে সরকারকে কস্ট অব ফান্ড বিবেচনা করে যথাসম্ভব সুলভ সুদে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানান তিনি।

বাজেটে টেক্সটাইল এবং রপ্তানি খাত ও এসএমই খাতের জন্য তেমন কিছু দেখা যায়নি উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, টেক্সটাইল খাতের উন্নয়নে ম্যান মেড ফাইবার থেকে ভ্যাটসহ সব ধরনের কর প্রত্যাহার এবং রপ্তানির উৎস কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করার জন্য পুনরায় সুপারিশ করেন তিনি।

ব্যক্তি করসীমার বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যক্তি শ্রেণির আয়করের সীমা বর্তমান ৩ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৩ লাখ করা হয়েছে। বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই করমুক্ত সীমা ৪ লাখ টাকা করার জন্য আমরা প্রস্তাব করেছিলাম। এসময় বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেন মো. জসিম উদ্দিন।

অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর (এটি) ব্যবসায়িক খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এআইটি এবং অগ্রিম কর (এটি) বিলুপ্ত করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম কিন্তু এ বিষয়ে বাজেটে কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। অগ্রিম আয়কর যথাযথ সমন্বয়/রিফান্ড না হওয়ায় পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পায়।’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষায় আরও গুরুত্ব দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি আমিন হেলালী, হাবিব উল্লাহ ডন, পরিচালক, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/জেডএস