গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে বেড়েছে কার্গো হ্যান্ডলিং। একই সময়ে বন্দরে জাহাজ হ্যান্ডলিংও বেড়েছে। তবে কমেছে কনটেইনার হ্যান্ডলিং। বিলাসদ্রব্যের চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেশি আমদানি হওয়ায় এ পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করেন বন্দরের কর্মকর্তারা। কারণ কনটেইনারে বেশিরভাগ বিলাসদ্রব্য এবং কার্গোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি হয়।

এছাড়া একই অর্থবছরে দেশের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে আয় বেড়েছে। এটি ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরে ওঠা-নামা মিলিয়ে কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক)। এর আগের অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউস। সে হিসাবে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৪ টিইইউস কনটেইনার কম হ্যান্ডলিং করা হয়।

গেল অর্থবছরে বন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এই পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ১৬০ টন। অর্থাৎ এক বছরে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৫৮৩ টন।

এছাড়া বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আগমনের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৫৩টি। তার আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৩১টি। সে হিসাবে বিদায়ী অর্থবছরে বন্দরে ২২টি জাহাজ বেশি আগমন করে।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, কার্গোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেশি আসে এবং কনটেইনারে বেশিরভাগ আসে বিলাসবহুল পণ্য। গত অর্থবছরে বিলাসবহুল পণ্যের চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেশি এসেছে। ডলার সংকটের কারণে এবার কনটেইনার আমদানি কমেছে।

এদিকে, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ করা হয়েছে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের। এর আগের অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ করা হয়েছিল ৫৯ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ২ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আহরণ করা হয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, বিলাসবহুল আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের কারণে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায় কম ছিল। তবে শেষের কয়েক মাসে অর্থাৎ বাজেটের আগে গাড়িসহ কিছু পণ্যের আমদানি হঠাৎ বেড়ে যায়। এ কারণে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। এছাড়া চোরাচালান এবং শুল্ক ফাঁকি বন্ধে কার্যকর নানা পদক্ষেপও রাজস্ব আদায় বাড়ার কারণ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী বলেন, বিলাসবহুল দ্রব্য আমদানি কম ছিল। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক।

এমআর/এসএম