শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটির কারণে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়নি। ছুটির পরদিন বুধবার (৩১ মার্চ) দরপতনের মধ্য দিয়েই লেনদেন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। আজকের লেনদেনের শুরুতেই শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। শেয়ার বিক্রির চাপে দেখা দেয় ক্রেতার সংকট। কমতে থাকে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম। শুরু হয় সূচকের পতন। যা অব্যাহত ছিল দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত।

দিন শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৯৫ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ৩০২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ও লেনদেন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনায় এমনিতেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা ছিল। নতুন করে করোনার প্রভাব বাড়ায় সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে, এই নির্দেশনার ফলে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় এবং আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এতে শেয়ার বিক্রি করে নগদ অর্থ উত্তোলনের চাহিদা বাড়ে। তাই পুঁজিবাজারে বড় পতন হয়েছে।

এ দিন বিমা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, যোগাযোগ,আইটি, সিরামিক, চামড়া, ভ্রমণ, বিবিধ এবং ওষুধ ও রসায়নসহ ১৫টি খাতের সবকটিরই শেয়ারের দাম কমেছে। শুধু তাই নয়, পুঁজিবাজারে বড় মূলধনী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও কমেছে। এতে বড় পতন হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দরপতনের পেছনে করোনা ইস্যু কাজ করেছে। মানুষ এখন ভয়ে আছে, কার কখন কী হয়! ফলে নগদ টাকা হাতে রাখছে। বেশিরভাগ মানুষ একসঙ্গে শেয়ার বিক্রি করে টাকা উত্তোলনের ফলে বাজারে দরপতন হয়েছে।’

ডিএসইর তথ্যমতে, বুধবার ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯৪ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১৬ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২০৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএস-৩০ সূচক ৪২ দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৯৪ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৬০ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬৩৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১টির, কমেছে ২৫৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

এ বাজারে দাম বাড়ার শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হচ্ছে- দেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স, সিএপিএমআইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ঢাকা ডাইং, মেঘনা পেট, ভ্যানগার্ড এএম এল রুপালি ব্যালেন্স ফান্ড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এমারেল্ড অয়েল, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং আইসিবি এএমএল সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড লিমিটেড।

এ বাজারে লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মা, রবি আজিয়াটা, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, গ্রামীণফোন, রহিমা ফুড, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২৬৪ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ২২৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫টির, কমেছে ১৬৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৫টির। এ বাজারে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

এমআই/এফআর