করোনার প্রকোপের মধ্যেও উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এ নির্বাচনে ‘সম্মিলিত পরিষদ’ ও ‘ফোরাম’ নামে দুই প্যানেলের নির্বাচন করছেন।

রোববার (৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার ফারুক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আমি উদ্যোক্তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এ খাতের উন্নয়নে আগামী দুই বছর নিজেকে উৎসর্গ করব। আমি মনে করি বিজিএমইএর সদস্যরা পূর্ণ প্যানেলসহ আমাকে বিজয়ী করবে। তারপরও বলছি, জয়-পরাজয় যাই হোক, আমি ফলাফল মেনে নেব।

তিনি বলেন, জয়ী হলে প্রথমে কারখানা সচল রাখব। মালিক ও শ্রমিকদের সম্পর্ক উন্নয়ন করব। সরকারের এ খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করব। এ জন্য সব প্রস্তুতিও নিয়েছি।

ফোরামর প্যানেল লিডার এ বি এম সামছুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী। টেকসই পোশাক শিল্প গড়ার লক্ষ্যে কাজ করব। বিজিএমই সদস্যরা শুধু আমাকে নয়, আমার পূর্ণ প্যানেলকে বিজয়ী করবে।

তিনি বলেন, সোমবার থেকে লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিয়ে কাজ চলমান রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। একের পর এক ঝড় আসছে। এসব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, এবারে নির্বাচনে আমি ও আমার প্যানেল জয়ী হবে বলে আশা করছি। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। নতুন বোর্ডের কাছে পণ্যের দাম বাড়ানোসহ অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। আমরা সেগুলো করার চেষ্টা করব।

নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ স্বাস্থ্য বিধি মানছে না, অভিযোগ ফোরামের
সম্মিলিত পরিষদ স্বাস্থ্য বিধি মানছে না বলে অভিযোগ করেছেন ফোরাম প্রধান এ বি এম সামছুদ্দিন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে বিজিএমই নির্বাচনের প্রবেশ পথে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটিয়েছে। এরা বিজিএমইর সদস্য না, ভাড়া করা লোক। তাদের কারণে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে পারছে না।

রোববার (৪এপ্রিল) সকাল ১১টায় দিকে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন। এ বি এম সামছুদ্দিন বলেন, নির্বাচনের আগেই যারা নির্বাচনে ও সরকারে নিয়ম মানে না তারা কীভাবে বিজিএমইএ পরিচালনা করবেন। তবে করোনার প্রকোপের মধ্যেও উৎসবমুখর পরিবেশে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ নির্বাচন হচ্ছে বলে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন তিনি।

ভোটদান শেষে সম্মিলিত পরিষদের পক্ষে ভোট চাইলেন মেয়র আতিক
বিজিএমইএর নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ভোট দিয়েছেন। তিনি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর হোটেল রেসিডনের ভোট দিতে আসেন। ভোটদান শেষে তিনি সম্মিলিত পরিষদের প্যানেলকে বিজয়ী করতে সদস্যদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অ্যাপারেল থেরাপি থেকে অ্যাপারেল ডিপ্লোম্যাসিতে যেতে হলে সম্মিলিত পরিষদের বিকল্প নেই। আরএমজি খাতকে এগিয়ে নিতে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেলকে বিজয়ী করতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। এরপর আমরা একই কাপে চা খেয়েছি। এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে। আমাদের ৫০ বিলিয়ন ডলারের রফতানিকে এগিয়ে নিতে হলে সম্মিলিত পরিষদের বিকল্প নেই। দীর্ঘ আট বছর পর একটি নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস অবশ্যই সম্মিলিত পরিষদের বিজয় হবে। একটি শক্তিশালী বিজিএমইএ গড়ে উঠবে।

এর আগের বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী, মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানসহ বিজিএমইএর নতুন পুরাতন ২০০ ভোটার ভোটদান করেন।

এমআই/ওএফ