করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে। এসময় অফিস ও যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। তবে লকডাউনে পোশাক কারখানা খোলা রাখতে চায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ ও ইএবি।

রোববার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানানো হবে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএর নতুন সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, তিনটি কারণে আমরা সরকারের কাছে লকডাউনে পোশাক কারখানা খোলা রাখতে চাই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রোববার বিজিএমইএর পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হবে।

ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের শ্রমিকদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর। এই শ্রমিকদের করোনা রোধের সক্ষমতা বেশি। ফলে সফলভাবে আমরা গত বছর থেকে গামেন্টস চালাচ্ছি। এখন পর্যন্ত করোনায় কোনো শ্রমিকের মৃত্যু হয়নি।

কারখানা শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ কারখানার আশপাশে থাকেন। তারা পায়ে হেঁটে অফিস করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ হলে, কারখানা ছুটির পরই গতবারের মতই দলে দলে শ্রমিকরা গ্রামে চলে যাবে। বাস, ট্রাক কিংবা লঞ্চ যেভাবেই যাবে সাধারণ মানুষের সাথে মিশবে। মিলে-মিশে বাড়িতে করোনা নিয়ে যাবে। এরপর আবারও যখন ঢাকায় আসবে তখন করোনা নিয়ে আসবে। করোনা থেকে মুক্ত থাকতে হলে পোশাক খাত খোলা রাখতে হবে।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দুইদিন পর শুরু হচ্ছে রোজা, এরপর ঈদ। কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকরা ঈদের আগে বেতন ও বোনাস পাবে না।

এছাড়াও গত এক বছর ধরে চলা করোনার কারণে অর্ডার কম হয়েছে। এখন বায়াররা পোশাক তৈরির অর্ডার দিচ্ছে। এই মুহুর্তে বায়ারদের অর্ডার ক্যান্সেল হলে, তারা ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে চলে যাবে। কারণ সেসব দেশে কারখানা বন্ধ থাকছে না।

সব মিলে লকডাউন করে সাময়িকভাবে কয়েজনের জীবন বাঁচাতে পারলেও দীর্ঘ মেয়াদে চাকরি হারিয়ে, না খেয়ে, হতাশাগ্রস্ত হয়ে মারা যাবে তার চেয়ে অনেক বেশি। সবদিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কারখানা খোলা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

এদিকে বিজিএমইএর সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লকডাউন চলাকালে কারখানা খোলার বিষয়ে রোববার দুপুর ১২টায় হোটেল সোনারগাঁয়ের পদ্মা হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ,বিটিএসইএ এবং ইএবি এই চারটি সংগঠন মিলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করছে। বিজিএমইএর পক্ষে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম সভাপতিত্ব করবেন। চার সংগঠনের নেতারা লকডাউনে কারখানা বন্ধ না রাখার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরবেন।

এমআই/আরএইচ