ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মেহমুদ হোসেন বলেছেন, কর্পোরেট ঋণের তুলনায় সিএমএসএমই (দেশের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ) খাতের খেলাপি ঋণ অনেক কম। এখন কর্পোরেট ঋণ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি। যেসব ঋণ আদায় করছি তা এসএমইতে দেওয়া হচ্ছে। 

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘অপরচুনিটিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ ইন দ্য এসএমই  সেক্টর’ শীর্ষক সেমিনারের এসব কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ-এর সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। 

অনুষ্ঠানের উপস্থিতি ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামির সাত্তার, এসএমই ফাউন্ডেশনের এমডি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

ন্যাশনাল ব্যাংক এমডি বলেন, কর্পোরেট ঋণের তুলনায় সিএমএসএমই খাতের খেলাপি ঋণ অনেক কম। তবে আমাদের ব্যাংকের এনপিএল অনেক বেশি। এটা একটি বড় সমস্যা। এখন ঋণ আদায় প্রক্রিয়া চলছে। খেলাপি ঋণ কমে যাবে। ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতো এসএমই ঋণ দেওয়া আছে। যা মোট বিতরণ করা ঋণের সাড়ে ১৪ শতাংশ। এটা ২৪ শতাংশে উন্নীত করব। এখন ব্যাংকের এসএমই নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। আশা করছি, আগামী দুই বছরে ন্যাশনাল ব্যাংকের পোর্টফোলিতে এসএমই খাতের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হবে। 

এসএমই ঋণে এখনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে জানিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডি বলেন, এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সাইকোলজিক্যাল সমস্যা রয়েছে। একটি ঋণে অনেক কাগজপত্র দরকার হয়। কিন্তু ব্যাংকার, উদ্যোক্তারা এ বিষয়ে আগ্রহী হন না। দক্ষতার ঘাটতি এর অন্যতম কারণ। এই আগ্রহের ঘাটতিতে এসএমই খাত পিছিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে ব্যাংকের এসএমই খাতের ঋণের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয় তা অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী দেশগুলোর জিডিপিতে যেখানে এসএমই খাতে অবদান ৪০-৬০ শতাংশ সেখানে বাংলাদেশে এখনও ৩০ শতাংশেরও কম। অর্থাৎ আমরা এসএমই খাতে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। অথচ লার্জ ইন্ড্রাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখতে একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে এসএমই খাতের বিকল্প নেই। তাই এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে ব্যাংকিং ফাইন্যান্সকে সহজতর করা, মার্কেট সম্পর্কে জানতে ও ডকুমেন্টেশন তৈরির জন্য দক্ষতা বাড়িয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া, এএসএমই জন্য আলাদা সেল বা মন্ত্রণালয় তৈরি করা ও প্রয়োজনীয় পলিসি সাপোর্ট দেওয়া প্রয়োজন। এসব করা সম্ভব হলে এসএমই খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করে দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী করবে।

এসআই/এসকেডি