সবজির দোকানে কমেছে ক্রেতার সংখ্যা

চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপণ্যের পর এবার সবজির বাজারে আগুন। রমজানকে কেন্দ্র করে শসা, বেগুন, চিচিঙ্গা ও টমেটোসহ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে।

দুই-তিনদিনের ব্যবধানে এসব সবজির দাম কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। দাম শোনার পর তারা আর সবজি কিনতে চাচ্ছেন না। 

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর বাড্ডা এলাকার কাঁচাবাজারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে। একই দরে অর্থাৎ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে শসা ও চিচিঙ্গা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। ঢেঁড়স, টমেটো, করলা ও পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে। আর ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে শজ্নে, শিম ও ধুন্দল।

মাঝারি আকারের লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। তবে এর মধ্যে একটু কম দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁপে এবং কাঁচামরিচ। বাজারে সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের কারণে সবজির দাম একটু বেশি। সঙ্গে যোগ হয়েছে রোজা। তাতে দাম একটু বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ইফতারে ব্যবহৃত সবজির।

ছুটির দিনে সবজি কিনতে বাজারে এসেছেন নেয়ামত হোসেন। শসা, লেবু আর বেগুনের দাম জানার পর কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। বাজারের জন্য যে টাকা নিয়ে এসেছেন তাতে অর্ধেক জিনিস কেনা যাবে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটু কমে সবজি পেতে সবগুলো দোকান যাচাই করেছেন। কিন্তু ৮০ টাকার নিচে কোথাও শসা ও বেগুন পেলেন না।

জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সবজি কিনতে বাজারে এলাম। এখন জিনিসের দাম শুনে আমি হতবাক। কেমনে চলমু, কী খামু, চিন্তা করছি। সরকার কি কিছুই দেখে না, এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না?’

তিনি আরও বলেন, ‘একে তো লকডাউনে ইনকাম নাই, এখন চলছে রোজা। তার ওপর সামনে ঈদ, কী করমু? এরমধ্যে জিনিসের দাম শুনে কিনতেই ইচ্ছে হচ্ছে না। মনে হয় না খেয়ে থাকি।’

পাঁচতলা বাজারের ব্যবসায়ী রেজওয়ান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালের চেয়ে আজ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। তাই নতুন করে সবজি আনিনি। গতকাল যা ছিল, তাই বিক্রি করছি।

একই কথা বলেন পোস্ট অফিস গলির সবজি বিক্রেতা মুন্না মিয়া। তিনি বলেন, রাতে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখি, শসা, টমেটো, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, পটলের দাম অনেক বেশি। তাই নতুন করে বেগুন ছাড়া কোনো সবজি আনিনি।

তিনি বলেন, আমি এখন টমেটো বিক্রি করছি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। আজকে যারা টমেটো এনেছে, তারা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করছে। তিনি বলেন, দাম বেশি হওয়ার কারণে বেচাকেনাও প্রায় অর্ধেক কমেছে।

সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে শাকের। ডাঁটার আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। একই দামে কিনতে হচ্ছে লাল শাক। অর্থাৎ এক আঁটি লাল শাক কিনতে ১৫ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। একই দরে বিক্রি হচ্ছে পাট ও কলমি শাক। লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা আঁটি। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এমআই/আরএইচ /জেএস