শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ভাজাপোড়া পছন্দ করেন অনেকেই। ভাজাপোড়ায় বেগুনির প্রতি বাঙালির ‘টান’ থাকায় বাজারে এখন বেগুনের চাহিদা বেশি। সে চাহিদার কারণে রমজানে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেগুনের দাম। তাতে একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি বেগুনে দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষকে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছে, তেমনি ইফতারের আয়োজনেও হিমশিম অবস্থা অনেকের।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাজধানীর বাসাবো, মাদারটেক কাঁচাবাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে ভালোমানের গোল বেগুন (তাল বেগুন) বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। একদিন আগে এ বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। অপরদিকে লম্বা বেগুন কিনতে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। যা একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা।

শুধু কাঁচাবাজারেই নয়, সুপারশপেও বেগুনের বাড়তি দাম দেখা গেছে। দেশের একটি সুপার চেইন শপে সবুজ গোল বেগুন কেজিপ্রতি ৯০ টাকা এবং লম্বা বেগুন কেজিপ্রতি ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

রমজানের শুরুতেই বেগুনের এমন দামে ক্ষোভ জানিয়ে আবজাল নামের এক ক্রেতা বলেন, কি খাবো বলতে পারেন? তেল, চিনি, পেঁয়াজ, মাংস কিংবা খেজুর; কিছুতেই হাত দিতে পারি না। যে আইটেমগুলো কেনা প্রয়োজন তা কিনতে পারি না। গতকাল যে বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হইছে আজ নাকি সেসব ১২০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাবে না বলে বলছেন বিক্রেতারা। এগুলো তো রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে আসে না। তাহলে এসবের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই কেনো? আসলে আমাদের পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারের কাছে অনুরোধ এগুলো বন্ধ করুন। অন্তত রমজান মাসে আমাদের ভালো করে বাঁচতে দিন।

খাদিজা ইয়াসমিন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সবকিছুই দামি! কি কিনবো আর কি কিনবো না সেই অঙ্ক মেলে না। সবসময় চেষ্টা করছি এক কেজি প্রয়োজন থাকলেও আধা কেজি দিয়ে চালাতে। তাও পারছি কই? রাতারাতি সব বদলে যায় আমাদের দেশে। বদলায় না শুধু ক্রেতাদের অসহায় অবস্থা।

সালাহউদ্দিন লাভলু নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কিছু বলে লাভ নেই। নিউজ হবে, কথা হবে। কিন্তু দাম তো কমবে না। আমাদের জিনিসপত্রের দাম কমানোটা দরকার। আমাদের পিঠ যে দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে সেটা দেখার বোঝার কেউ নেই। সংশ্লিষ্টদের বলবো, দয়া করে দাম কমানোর চেষ্টা করুন।

বেগুন বিক্রেতা শামীম মিয়া বলেন, কাঁচাবাজারের অবস্থা প্রতিদিনই বদলায়। তবে রমজানে বেগুনের দাম অনেক বেড়েছে। আমাদেরও কিছু করার নাই। সব তো আড়তদারদের হাতে। তারা বেশি দামে বিক্রি করে বলেই আমরাও বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করি।

আরেক বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের তো হাত নেই। আমরা ছোট ব্যবসায়ী। বড় ব্যবসায়ীদের ধরা উচিত। তারা কেন একদিনের ব্যবধানে দাম দ্বিগুণ বাড়ায়। তবে আজ যেহেতু রোজা শুরু তাই মানুষ বেগুন বেশি কিনছে। এ কারণেই দাম বাড়ছে।

এমএম/জেডএস