পুলিশের সদস্য (সাবেক নায়েক) মো. আলাউদ্দিন ঢালী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুটি পৃথক মামলা বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় চলমান ছিল। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বরিশালের ওই আদালতে সাক্ষী দিতে এসে মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা মো. আল আমিনকে আসামি আলাউদ্দিন ও তার বিয়াই পুলিশের নায়েক মো. রুহুল আমিনসহ অজ্ঞাত কয়েকজন হুমকি প্রদান করে ও পথরোধ করে এবং অনেকক্ষণ আদালত প্রাঙ্গণে অবরুদ্ধ করে রাখে। শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ করে দুদকের ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করতে হয়েছে।

আর ওই ঘটনায় পুলিশের সদস্য (সাবেক নায়েক) মো. আলাউদ্দিন ঢালী ও তার আত্মীয় মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে রোববার (১ এপ্রিল) আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কর্তব্যকাজ সম্পাদনে বাধা ও ক্ষতিসাধনের হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন ধারায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাউয়ুম হাওলাদার ওই চার্জশিট দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুই মামলা থেকে পরিত্রাণ লাভের অপচেষ্টায় বাদী মো. আল-আমীনকে ২০২১ সালের দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণের নিচ তলায় অবস্থিত পুলিশ বক্সের সামনে চার্জশিট দাখিল ও সাক্ষ্য প্রদান করায় আসামি মো. আলাউদ্দিন ঢালী এবং তার বেয়াই পুলিশের নায়েক মো. রুহুল আমিনসহ কয়েকজন মিলে তার পথরোধ করে ক্ষতিসাধনের হুমকি প্রদান করেন। ফলে আসামি ও বাদীর মধ্যে প্রচণ্ড বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। পরিস্থিতি ভয়াবহ বিবেচনায় আল-আমীনের সঙ্গে থাকা অপর এক কর্মকর্তা বরিশালের দুদক অফিসকে জানায়। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ সদস্যরা লাঠিচার্জ করে। পরবর্তীতে দুদকের বরিশালের উপপরিচালক দেবব্রত মন্ডল তাকে উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে আসেন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তার স্বাধীনভাবে তদন্তপূর্বক অপরাধ বিবেচনায় আদালতে চার্জশিট দাখিল ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদানের অধিকার রয়েছে। আসামি মো. আলাউদ্দিন ঢালী একজন সাবেক পুলিশ সদস্য (নায়েক) হয়েও দুদকের একজন কর্মকর্তার কর্তব্যকাজ সম্পাদনের বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগে বাধা প্রদান ও ক্ষতিসাধনের হুমকি দেওয়ার অপরাধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া তদন্তে আসামি মো. রুহুল আমিনের নাম এসেছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ১৯ (৩), দণ্ডবিধির ১৮৬/১৮৯ ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

আরএম/এমজে