দেশের নাগরিকদের জন্য চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির (স্কিম) ৯ মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) পর্যন্ত কিস্তির টাকা জমা দিয়ে বিভিন্ন স্কিমে নিবন্ধন নিয়ে যুক্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৪৭ জন ব্যক্তি।

চারটি স্কিমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরকারি হিসাবে ৪৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়েছে। যার মধ্যে প্রবাস স্কিমে ৫৯৮ জন, প্রগতিতে ১১ হাজার ১০৫ জন, সুরক্ষায় ১৬ হাজার ৩৭৬ জন ও সমতা স্কিমে ২৬ হাজার ৫৮০ জন ব্যক্তি যুক্ত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট পেনশন স্কিম উদ্বোধন করা হয়েছিল।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গোলাম মোস্তফা বলেন, এখন পর্যন্ত পেনশন স্কিমে যুক্ত হয়েছেন ৫৪ হাজারের বেশি ব্যক্তি। যেভাবে মানুষ অংশ নিচ্ছে খুব শিগগিরই ওই সংখ্যা লাখে চলে যাবে। মাঝখানে কিছুদিন ধীরগতি ছিল, এখন মানুষের আগ্রহ ও অংশগ্রহণ বেড়েছে। আশা করছি এই গতি অব্যাহত থাকবে। প্রচারণার জন্য আমরা পেনশন মেলা করছি।

প্রবাস স্কিম, প্রগতি স্কিম, সুরক্ষা স্কিম এবং সমতা স্কিম- এ চার স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে সরকার। চালুর প্রথম দিন থেকেই সাড়া মিলছে। ক্রমাগত যা ঊর্ধ্বমুখী। পেনশন বিধিমালা বলছে, সর্বজনীন পেনশন প্রথায় যার যত টাকা জমা, মেয়াদ শেষে তার তত বেশি পেনশন। অন্যদিকে, স্বল্প আয়ের মানুষদেরও বিমুখ করবে না এ উদ্যোগ। যারা মাসিক ৫০০ টাকা জমাবেন, তাদের জন্য শুরু থেকেই থাকবে সরকারের আরও ৫০০ টাকার ভর্তুকি। সবমিলিয়ে, সবার জন্যই থাকছে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বাড়তি কয়েকগুণ মুনাফা।

আর পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়ার যোগ্য হবেন এবং মাসিক পেনশনবাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত হিসাবে রাখার ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর। ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে চলতি বছরের জুলাই বা তার পরবর্তী সময়ে যারা স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে যোগদান করবেন, তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ঢোকা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তারা সবাই ‘প্রত্যয়’ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। গত ২০ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন ইস্যু করেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ কর্তৃক ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস করা হয়। বহুল প্রতীক্ষিত সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি (স্কিম) ওই বছরের ১৭ আগস্ট সকালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর সবার জন্য সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি উন্মুক্ত করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট পেনশন স্কিম উদ্বোধন করা হয়েছিল। উদ্বোধনের পর জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট- www.upension.gov.bd চালু করা হয়েছে এবং চারটি স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেওয়া শুরু হয়।

আরএম/এমজে