ঈদের বাজারে বৃষ্টির হানা

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়ার সঙ্গে রাজধানীর শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। ঠিক তখনই নেমে আসে বৈশাখী বৃষ্টি। এতে ভিড় কিছুটা কমে আসে। এই বৃষ্টি জনজীবনে স্বস্তি দিলেও ঈদের কেনাকাটা করতে না পেরে হতাশ ক্রেতারা। পাশাপাশি শেষ সময়ে বিক্রি না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারাও।

রাজধানীর মালিবাগ, বেইলি রোড, পল্টন এবং গুলিস্তান এলাকার মার্কেটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতা উপস্থিতি স্বাভাবিকের মতোই। তবে আশানুরূপ নয়। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ আসছেন না মার্কেটে। তবে মার্কেটে ভিড় কমে আসায় ক্রেতারা সহজে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে গিয়ে পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস দেখছেন, কিনছেন সাধ্যের মধ্যে থাকা পছন্দসই পণ্য।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অফিস খোলা থাকায় আজ সকালে থেকে ক্রেতা কম ছিল। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, অফিস শেষে বিকেলে ক্রেতাদের ভিড় থাকবে। কিন্তু হঠাৎ করেই নেমে আসে বৃষ্টি। ভিড় কিছুটা থাকলেও পরে তা কমে আসে। এ কারণে ক্রেতা নেই। ফলে কেনা-বেচাও গতকালের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

গুলিস্তানের হকার মার্কেটের ব্যবসায়ী শামিম হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কালকে চাঁদ উঠলে পরদিন ঈদ। সুতরাং আজকে আশা ছিল ব্যবসা হবে জমজমাট। কিন্তু তা আর হলো না। তবে আগামীকাল দিন ভালো থাকলে ব্যবসা ভালো হবে।

তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারও মার্কেট শুরুর দিকে খুব একটা ক্রেতা ছিল না। ঈদের সময় কাছাকাছি চলে আসায় গতবারের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরুর পর থেকে।

পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি বাদ দিলে গতবারের এই দিনের তুলনায় ব্যবসায় ভালো হয়েছে। আগামীকাল দিন ভালো থাকলে চালান উঠে যাবে। লোকসান কাটিয়ে দোকান ও শ্রমিকদের ভাড়া দিয়ে দেওয়া যাবে।

পীর ইয়ামেনি মার্কেটের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো ব্যবসা হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহে একটু ভালো বিক্রি হয়েছে। আজ বিকেলে বৃষ্টিতে অনেকেই মার্কেটে আসতে পারেননি।

বেইলি রোডের শাড়ি ব্যবসায়ী নিলুফারা আশিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেচা-বিক্রি কম। লকডাউনের পর এখন বৃষ্টি, সব মিলে ব্যবসাই হচ্ছে না। ঈদ কালেশন অর্ধেকও বিক্রি হয়নি।

তিনি বলেন, ব্যবসা না হউক, কোনোভাবে যদি দোকান ভাড়া আর কর্মচারীদের বেতনের খরচ উঠে আসে, তাহলেই হয়। আমার দোকানে ১ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকার পর্যন্ত শাড়ি রয়েছে। প্রতিটি শাড়ি কোয়ালিটিফুল, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না।

বেইলি রোডের আরেক ব্যবসায়ী রুকনুজ্জামান বলেন, ঈদের আর দুদিন বাকি। ফলে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ এখন মার্কেটে আসছেন না। এমন দিনেও আবার শুরু হয়ে বৃষ্টি সব কিছু মাটি করে দিল।

মালিবাগের আয়েশা শপিংয়ের ট্রাউজার,পাঞ্জাবি, বেল্ট ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যবসা ভালো না। চারভাগের একভাগ কেনা-বেচা হচ্ছে।

মৌচাক মার্কেটের শাড়ি ও থ্রি-পিস ব্যবসায়ী আফরোজা আরেফিন বলেন, গতবার লস ছিল, এবারও লসে আছি। এখন পর্যন্ত ব্যবসায় যে  হয়েছে, তাতে চালান ওঠেনি। কালকের বাজার ভালো হলে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।

দুই মেয়েকে নিয়ে মার্কেটে আসা সামসুন্নাহার ঢাকা পোস্টকে, গতবারের ঈদে কোনো কিছু কিনিনি। আজকে বেতন পাইছি, মেয়েদের জামা-কাপড় কিনতে আসছি। দেখি পছন্দ হলে কিনব।

 এমআই/আরএইচ