রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারে উঠতে হাতের বাম পাশে ফুটপাতে মানুষের দীর্ঘ লাইন। দূর থেকে দেখলে মনে হবে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে, কিন্তু না। সামনে গিয়ে দেখা গেল, ‘খলিলের গোস্ত’র বিতান নামে এক দোকানে গরুর মাংস বিক্রি করছে। সেখানে গরুর মাংস কিনতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে ক্রেতারা।

দোকানের সামনে মানুষের ভিড়। উপরে সামিয়ানা টাঙ্গানো। নিচে জবাই হচ্ছে গরু ও ছাগল। দোকানে একাধিক কসাইরা গরুর মাংস কাটছে। কয়েকজন ওজন করে বস্তায় মাংস ভরছে। দোকানের সামনে কর্মীরা লাইন ঠিক করছে।   

জানা গেল, ঈদের আগের দিন (১৩ মে) কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা গরুর মাংস দামে বিক্রি করছে দোকানটি। তারপরও ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন।

এ বিষয়ে খলিলের গোস্ত বিতানের খলিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এখানে দেশি গরুর টাটকা মাংস বিক্রি করা হয়। তাই সব সময় ক্রেতা বেশি থাকে। অনেক দূর থেকেই ক্রেতারা এখান থেকে মাংস কিনতে আসে। ঈদের আগের দিন হওয়ায় আজকে চাপ বেশি। সকাল থেকেই মানুষ লাইন ধরে গোস্ত কিনছে। এবার ১০০টির মত গরুর মাংস বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, গতকাল গরুর মাংস কেজি ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজকে ৬৫০ টাকা। গরু কেনায় দাম ও খরচ বেশি পড়েছে, তাই ৫০ টাকা বেশি নিচ্ছি। খাসির মাংস আগের দামে কেজি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

খলিলের দোকানে গরুর মাংস কিনতে লাইনে দাঁড়ানো জাবেদ নামের এক ক্রেতা জানান, এখানে গরুর মাংস টাটকা পাওয়া যায়। তাই কিনতে এসেছি। বাজারে গরু বলে অনেক সময় মহিষের মাংস দেয়। মাংসে ভেজাল করে না বলে মানুষ এখানে বেশি আসে। কিন্তু তারাও সুযোগ নিচ্ছে। হঠাৎ দাম ৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে- অভিযোগ করেন এ ক্রেতা।

রাজধানীর মতিঝিল, মালিবাগ মুগদাসহ বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আগের দিন গরুর মাংসের কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দাম বেড়েছে। আজকে গরুর মাংস বিক্রি করছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। খাসির মাংস ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে ৯০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায়।

এদিক গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়লেও ব্রয়লার মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তাই গরুর মাংসের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ ভিড় করছে মুরগির দোকানে।

মুগদার মুরগী বিক্রেতা পলাশ জানান, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সোনালি (কক) ও লেয়ার (লাল) কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আজকে কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা ও লেয়ার ২৪০ টাকা।

মুরগি কিনতে আসা গৃহিনী শেফালি জানান, গরুর মাংসের যে দাম তা আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব না। তাই ব্রয়লার মুরগি কিনলাম। আমি এক সপ্তাহ আগে ১৩০ টাকা কেজি কিনেছিলাম, আজকে ১৪০ টাকায় কিনলাম।  

এদিকে বাজারে বেশিরভাগ সবজি আগের দামে বিক্রি হলেও ঈদের আগে বেড়েছে শশা ও টমেটো দাম। মতিঝিল বাজারের সবজি বিক্রেতা আসলাম জানান,  ঈদের শশা ও টমেটোর দাম বেড়েছে। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে শশা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। টমেটো ৫০ টাকা।

এসআই/এসএম