২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইটের পরিবর্তে শতভাগ পরিবেশবান্ধব ব্লকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। 

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেলে সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, বায়ুদূষণের মাত্রা জানার জন্য ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় ও শিল্পঘন শহরগুলোতে ১৬টি সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বায়ুমান পরিবীক্ষণের প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণ এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিশ্লেষণ করে দৈনিক ভিত্তিতে বায়ুমান সূচক (Air Quality Index) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে। শব্দদূষণ কমাতে বাংলাদেশ সচিবালয় সংলগ্ন এলাকাকে হর্নমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বায়ুদূষণ হ্রাস ও মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসের লক্ষ্যে 'ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯)' এর আলোকে ছিদ্রযুক্ত ইট ও মাটির বিকল্প উপাদানে তৈরি বিভিন্ন ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে ইউএনএফসিসিসি'র বাধ্যবাধকতা অনুসরণে জাতীয় গ্রিনহাউজ গ্যাস ইনভেন্ট্রি তৈরি ও হালনাগাদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্র তীরবর্তী ছোট দ্বীপ ও নদীতীরের চরগুলোতে অভিযোজনমূলক কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও সরকার 'ডেভেলপিং বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড লিস্ট অব প্লান্টস অ্যান্ড ডেভেলেপিং ইনভাসিয়া প্লান্টস স্পেসিস ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাটেজি ফর সিলেক্টেড এরিয়াস' শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের এক হাজার উদ্ভিদ প্রজাতির রেড লিস্ট ইনডেক্স তৈরি এবং ৫টি নির্বাচিত এলাকায় ভিনদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাপনা কৌশল নির্ধারণ করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ বিভাগ বাস্তবায়নাধীন 'জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার অর্থায়নকে সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তকরণ' শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের নেওয়া জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি পরিকল্পনা এবং কৌশলকে সরকারি বাজেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় এরইমধ্যে পঁচিশটি মন্ত্রণালয়ের বাজেট কাঠামোতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া ২০১৪ সালে সরকারের নেওয়া ক্লাইমেট ফিসক্যাল ফ্রেমওয়ার্ককে ২০২০ সালে হালনাগাদ করে এর পরিধি বিস্তৃত করা হয়েছে এবং জলবায়ু অর্থায়নে ব্যক্তিখাতের অংশগ্রহণসহ উদ্ভাবনমূলক অর্থায়নের বিষয়গুলো সংযোজন করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

এমএইচএন/জেডএস