অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা শীঘ্রই জাতীয় সংসদে পাস হবে- এমনটাই জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশকালে এ তথ্য জানান তিনি।   

তিনি বলেন, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশুদের জন্য শিশু বিকাশ কেন্দ্র কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহের দুঃস্থ ও অসহায় মহিলাদের কর্মসংস্থান প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 
মন্ত্রী বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা গত অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা।

মুস্তফা কামাল বলেন, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা শীঘ্রই জাতীয় সংসদে পাস হবে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে সব শিশুর বাল্যবিবাহ নির্মূলের পরিকল্পনা করেছি। 

তিনি বলেন, স্বল্প শিক্ষিত, দরিদ্র ও অসহায় নারীদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ ও আইটি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছি। মহিলাদের জন্য ঢাকায় কমিউনিটি নার্সিং ডিগ্রি কলেজ স্থাপন এবং তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কার্যক্রমের বাস্তবায়নসহ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা বিধানসহ নারীর সামগ্রিক আর্থ সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখব।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে সময়োপযোগী নীতি কৌশল বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশে ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় হয়েছে। সকল পরিকল্পনা এবং জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ অনুসরণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন, জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণ ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদেরকে সামগ্রিক উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণে সরকার বদ্ধপরিকর। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসরণে নারীর মানবিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুবিধা বৃদ্ধি, নারীর কণ্ঠস্বর ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নারীদের জন্য অবকাঠামো ও যোগাযোগ পরিষেবা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদার করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নারী ও শিশুদের সংকট ও ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা ও স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিতকরণে আমরা সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছি। কোভিড-১৯ এর চলমান অভিঘাত মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নারীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছি। পল্লী ও শহরাঞ্চলের দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ও তাদের গর্ভস্থ সন্তানের পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে মাতৃত্বকাল ভাতা ও কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা প্রদান এবং মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রধান কার্যক্রমসমূহ বিভাগীয় জেলার ও ছয়টি জেলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জন্য ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার এবং ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতাল ও ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ মোট ৬৭টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল স্থাপন করা হয়েছে। মোবাইল অ্যাপস ‘জয়’ এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

এমএইচএন/আরএইচ