আ হ ম মুস্তফা কামাল

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসাবান্ধব বাজেট হওয়ায় এ বাজেট বাস্তবায়িত হলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শুক্রবার (৪ জুন) বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট ব্যবসাবান্ধব। আমি মনে করি, ব্যবসায়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। আর উৎপাদনে যেতে হলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কারণ লোকবল ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছর বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৮.২ শতাংশ ধরেছিল সরকার। তা অর্জিত না হওয়ায় এবার সেই লক্ষ্যে রাশ টেনেছেন অর্থমন্ত্রী। এবার প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭.২ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। আমাদের অর্থনীতির অবস্থা এখন সারা বিশ্বের আলোচনার বিষয়। লক্ষ্য ঠিক মতো বাস্তবায়ন করতে পারলে সামনের বছরও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।

গত দুই বছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঊর্ধ্বগতির উদাহরণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ৩০ জুন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০ সালের ৩০ জুন তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ বিলিয়ন ডলারে। এক বছরে বেড়েছে ৪ বিলিয়ন। এরপর ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর তা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৩ বিলিয়ন ডলারে। আর বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। দুই বছরও হয়নি রিজার্ভ বেড়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। তার মানে আমাদের যোগ্যতা আছে।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

৩ জুন (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশে রাখার কথা বলা হয়েছে। এডিপি বা উন্নয়ন বাজেট ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট এটি। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। বৈদেশিক খাত থেকে নেওয়া হবে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার এক কোটি টাকা।

এসআর/এসআই/ওএফ/জেএস