অর্থপাচার, ঘুষ লেনদেন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নে জনপ্রিয় এমএফএস
অর্থপাচার, ঘুষ লেনদেন, অনলাইন জুয়া ও বেটিং, সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়ন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনসহ নানা অবৈধ আর্থিক কার্যক্রমে বাংলাদেশ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
একই সঙ্গে লেনদেন বিবরণী আয়কর রিটার্নে সংযুক্ত করার বিধান না থাকার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঘুষ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবেও জনপ্রিয়।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২৭ মে) ধানমন্ডির নিজ কার্যালয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উঠে আসে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
আজ মোবাইল আর্থিক সেবাখাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
টিআইবির গবেষণা বলছে, এমএফএস খাতকে করায়ত্ত করা এবং বিদ্যমান সুশাসনের ঘাটতির ফলে এই খাতে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র সংকুচিত এবং সুষ্ঠু বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। গ্রাহকের স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে যেখানে উচ্চ হারে সেবা মূল্য ধার্য করার মাধ্যমে গ্রাহকের ওপর আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহক ও রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া এই খাতের মাধ্যমে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাঙ্ক্ষিত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিগত হিসাবধারীদের মধ্যে ৫২.৬ শতাংশ প্রলোভন/মিথ্যা তথ্য, ৪২.১ শতাংশ ফোনকল/এসএমএস পাঠিয়ে প্রতারণা এবং ১২.৩ শতাংশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। যার মধ্যে ব্যক্তিগত হিসাবধারীরা সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, এজেন্টরা সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং মার্চেন্ট হিসাবধারীরা সর্বনিম্ন ৫৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার স্বীকার হয়েছে।
অন্যদিকে বিভিন্ন অনলাইন গ্যাম্বলিং ও গেমিং বা বেটিংযের অর্থ লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এমএফএস। অনলাইন জুয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইট/অ্যাপে লেনদেনের জন্য বিকাশ, ‘নগদ’, রকেট ও উপায়-এর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হলেও সংশ্লিষ্ট এমএফএসপি তা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অনলাইন বেটিং অধিক সক্রিয় হয় বিশেষ করে আইপিএল, বিপিএল ও বিশ্বকাপের সময়ে।
২০২২ সালে এমএফএস ব্যবহার করে ৭৫ হাজার কোটি পাচার হয়েছে বলে সিআইডির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আরএম/এমএ