চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি হলেও বছর শেষে বড় আকারে ঘাটতির পথে হাঁটছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক মনে হলেও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও অর্থবছরের শেষে সংশোধিত তিন লাখ এক হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আদায় করতে হবে আরও ৮৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। যা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

চলতি অর্থবছরের মে পর্যন্ত দুই লাখ ৬২ হাজার ১১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সাময়িক হিসাবে আদায় হয়েছে প্রায় দুই লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। ১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৪৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক সাত শতাংশের বেশি।

প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে জুন-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে চূড়ান্ত হিসাবে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৬২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। 

এ বিষয়ে এনবিআরের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস বিভাগের তিন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, করোনায় লকডাউনে সব কিছুতেই ধাক্কা খেয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ মুহূর্তে এনবিআরের বাড়তি কোনো উদ্যোগ নেওয়ারও সুযোগ নেই। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব বলা যায়। তবে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম করোনাকালীন সময়ে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের প্রবৃদ্ধিকে আশাব্যঞ্জক বলে দাবি করছেন। 

অন্যদিকে লকডাউনের আগে এনবিআর ২৯ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছিল, যা অনুমোদিত হয়। ফলে নতুন লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় তিন লাখ এক হাজার কোটি টাকা।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে, যার পরিমাণ এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। এছাড়া, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

আরএম/আরএইচ