আমেরিকার পর ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ মেক্সিকোর
বামে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমও, ডানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
আমেরিকার পর এবার প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোও ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক (ট্যারিফ) আরোপের ঘোষণা করেছে। এই নতুন শুল্কনীতির কারণে ভারতেও বাণিজ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এমন এক সময়ে মেক্সিকো এই সিদ্ধান্ত নিল, যখন কিছুদিন আগে আমেরিকার আরোপ করা একই ধরনের শুল্ক নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কাটাতে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়েছে।
মেক্সিকো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ ট্যারিফ (শুল্ক) বসাবে। এই সিদ্ধান্ত আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। মেক্সিকো সরকার জানিয়েছে, দেশের স্থানীয় শিল্প এবং উৎপাদকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্যই এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
কোন কোন পণ্যে শুল্ক
এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এমন সব শিল্পপণ্যে, যা মেক্সিকোর স্থানীয় শিল্পকে বিদেশি প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দিচ্ছে। শুল্ক আরোপ করা পণ্যগুলো হলো— অটো পার্টস ও হাল্কা গাড়ি, পোশাক, টেক্সটাইল, খেলনা, প্লাস্টিক, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, চামড়াজাত পণ্য ঘরোয়া নানা জিনিস এবং সাবান ও পারফিউমসসহ নানা কসমেটিক্স।
বিজ্ঞাপন
মেক্সিকোর দাবি, ঘরোয়া শিল্পকে বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত দেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য চুক্তি নেই তাদের ওপরেই এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এর ফলে তাদের অতিরিক্ত রাজস্ব হিসেবে ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে বলেও আশা করে মেক্সিকো।
মেক্সিকো কেন শুল্ক বাড়াচ্ছে
মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমও দেশের শিল্পের জন্য আরও বেশি সুরক্ষা প্রদান এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চান।মেক্সিকো সরকারের দাবি, তাদের দেশ এশিয়ায় তৈরি শিল্পপণ্যের, বিশেষ করে চিনের ওপর, চরমভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। ফলে তাদের দেশে বাড়ছিল বাণিজ্য ঘাটত। এই কারণে আমদানি কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো, কর্মসংস্থান তৈরি করা এবং জাতীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে চাইছে তারা। এই তিনটি লক্ষ্য নিয়েই ওই ট্যারিফ আরোপ করা হচ্ছে।
ভারতের ওপর প্রভাব কতটা
এর ফলে প্রভাব পড়বে ভারতীয় অটোমোবাইল শিল্পে। কারণ, গাড়ির আমদানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করায় ভারতীয় অটোমোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের অন্যতম বড় বাজারে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে।
শিল্প মহলের মতে, এর ফলে ভারতের গাড়ি রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ধস নামতে পারে। প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি রপ্তানিতে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে। ইতোমধ্যেই ভারত সরকারকে মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এমএন