আলু উৎপাদন ও ভোগে বৈচিত্র্য না এলে সমস্যা কাটবে না : বাণিজ্য উপদেষ্টা
ফাইল ছবি
আলুর উৎপাদন ও ভোগে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, এতে উৎপাদন বেশি বা কম হলে যে সংকট তৈরি হয়, তা সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, দেশের বিপুল খাদ্যপণ্য আমদানি ব্যয় কমাতে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায় সমস্যা ছিল, আবার এ বছর কম, এতেও সমস্যা। শুধু রপ্তানির ওপর নির্ভর না করে স্থানীয় ভোগ ও চাহিদা বাড়ানোও প্রয়োজন। আলুর দাম কমলেও ভোগ কেন বাড়ছে না, সে বিষয়ে কারণ ও প্রয়োজনীয় উৎপাদন মাত্রা বিশ্লেষণের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কুড়িলে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ) আয়োজিত আলু উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হিমাগার সমিতির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, আলু দেশের দ্বিতীয় প্রধান অর্থকরী ফসল ও খাদ্য। ৯০ থেকে ১১০ দিনের স্বল্পমেয়াদি আলুর ফলন অন্যান্য খাদ্যশস্যের প্রায় তিন গুণ। আলুর এ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে দেশের অভ্যন্তরে খাদ্য হিসেবে আলুর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রক্রিয়াজাতকৃত আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গুণগত মানসম্পন্ন আলু রপ্তানি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার উদ্দেশেই এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও চীনের ভুই গ্রুপের চেয়ারম্যান সাউ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, গত মৌসুমে দেশে ১ কোটি ৪ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। খাওয়ার আলুর চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন, অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিদেশে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রপ্তানি না হওয়ায় দাম কমেছে। এক বছর দাম বাড়ে আবার এক বছর কমে। এ প্রবণতা স্বাস্থ্যকর নয় এবং উৎপাদন পর্যায়ে দাম কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশে আলুর বহুমুখী ব্যবহার অনুসন্ধান, রপ্তানি বৃদ্ধি, আধুনিক সংরক্ষণ প্রযুক্তি প্রবর্তন এবং আলু প্রক্রিয়াজাত শিল্প সম্প্রসারণকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়েছিল আলু উৎসব ২০২৫। অনুষ্ঠানে দেশের প্রান্তিক কৃষক, কোল্ড চেইন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং নেতারা অংশ নেন।
সারা দেশ থেকে প্রায় ৫০০ জন কৃষক মেলায় উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ১০ জনকে আদর্শ কৃষক হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। উৎসবে দেশি-বিদেশি ৬৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। স্টলগুলোতে আধুনিক আলু চাষাবাদ, কোল্ড স্টোরেজ প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াজাতকরণ, মূল্য সংযোজন, রপ্তানি, কৃষিযন্ত্র, কোল্ড চেইন এবং আলু দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
এসআই/এসএসএইচ