বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ের অবস্থা ভালো না হওয়ায় নানা খাতের ব্যয়ে কৃচ্ছ সাধন নীতি গ্রহণ করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত বছর থেকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নতুন গাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। যা ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।

কিন্তু নতুন ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ১লা ‍জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হয়েছে। এখন থেকে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সকল প্রকার নতুন/প্রতিস্থাপক যানবাহন কেনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, ডিফেন্স ফাইনান্স বিভাগের কন্ট্রোলার জেনারেল সার্ভিসের কাছে এ পরিপত্র পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

পরিপত্রে বলা হয়, চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সরকারের কৃচ্ছ সাধন নীতির আলোকে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ২০২১-২০২২ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সকল প্রকার নতুন/প্রতিস্থাপক যানবাহন ক্রয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।

এর আগে গত বছর জুলাই মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্রে সব ধরনের গাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ধাপে সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সরকারের কৃচ্ছ সাধন নীতির আলোকে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের আওতায় সব ধরনের নতুন বা প্রতিস্থাপক হিসেবে যানবাহন ক্রয় বন্ধ থাকবে। পরে ডিসেম্বর মাসে আরেকটি পরিপত্রে অর্থ বিভাগের গত ৮ জুলাইয়ের পরিপত্রের ধারাবাহিকতায় সেই মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা মোকাবিলায় অর্থবছরের কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনেই বাজেট ব্যয়ে কৃচ্ছ সাধন বাস্তবায়ন শুরু করেছে। ১ জুলাই প্রথম দিনেই সরকারি ভ্রমণ ব্যয়ের ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী দিনগুলোতে সরকারি চাকরিজীবীদের সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ পরিহারের। এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার পর থেকেই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিপরীতে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যয় বেড়ে গেছে। তাই সরকার ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য গাড়ি কেনা হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প তাদের প্রকল্পের অর্থ থেকে গাড়ি কিনে থাকে। ‍

এনএম/এইচকে