দেশীয় বাজারে ক্রমবর্ধমান হারে ইয়ার্নের (এক ধরনের সুতা) দাম বেড়ে যাওয়ায় পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তারা বলছেন, পোশাক শিল্পের প্রধান রফতানি বাজারগুলোতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গণহারে টিকাদান কার্যক্রম নেওয়ায় এসব দেশে দোকানপাট খুলছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসলেও উদ্যোক্তারা তা নিতে পারছেন না স্থানীয় পর্যায়ে ইয়ার্নের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে।

রোববার (৮ আগস্ট) পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত ইয়ার্নের মূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে বিজিএমইএ অফিসে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও টেরিটাওয়েল নেতারা ইয়ার্নের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক রাজিব চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন, বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিকেএমইএর পরিচালক ফজলে শামীম এহসান, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসাইন প্রমুখ।

সভায় রফতানিকারকরা বলেন, বর্তমানে স্থানীয় মিলগুলো ইয়ার্নের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছে, যা এক কথায় অসহনীয়। ন্যূনতম সময়ের মেয়াদ দিয়ে প্রোফর্মা ইনভয়েস (পিআই) দিচ্ছে, যে সময়ের মধ্যে এলসি খোলা দুরূহ। অথচ ক্রেতাদের সঙ্গে অর্ডার কনফার্ম হতেও এরচেয়ে অনেক বেশি সময় লেগে যায়। এ কারণে অনেক উদ্যোক্তা অর্ডার ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। 

অন্যদিকে, অনেকে লোকসান দিয়ে অর্ডার নিচ্ছেন শুধুমাত্র কারখানা চালু রাখতে। আর ক্রেতারা শুধুমাত্র এফওবি দেখছেন, মূল্য বাড়াচ্ছেন না। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাক শিল্প প্রতিযোগী সক্ষমতা ক্রমেই হারাচ্ছে।

ইয়ার্নের মূল্য বৃদ্ধির ফলে শিল্পে যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো কীভাবে সমাধান করা যেতে পারে, সে বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, সংশ্লিষ্ট মহলগুলোর অবগতির জন্য অনতিবিলম্বে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইয়ার্নের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পোশাক শিল্পে সৃষ্ট সংকট তুলে ধরা হবে। এছাড়া যৌক্তিক মূল্যে ইয়ার্নের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এমআই/ওএফ/জেএস