মার্কিন ক্রেতাদের দেশের তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

ওয়াশিংটন ডিসি’তে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘রানা প্লাজার সাত বছর পর : কে কি করেছে’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। একইসঙ্গে একটি নিরাপদ বৈশ্বিক বাজার প্রতিষ্ঠায় মার্কিন ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের দামের ক্ষেত্রে আরও যুক্তিসঙ্গত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিএমইএ।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমাদের কারখানাগুলো নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের জন্য ক্রমবর্ধমান হারে বিনিয়োগ করছে। এছাড়া গত পাঁচ বছরে উৎপাদন ব্যয় ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর বিপরীতে আমাদের পোশাকের মূল্য প্রতিবছর কমছে। যদিও এটি সত্য যে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে মূল্য নির্ধারণ করা যায় না, তারপরও সামাজিকভাবে নৈতিকতা মেনে পণ্য উৎপাদনের জন্য কেউ কম দামের যৌক্তিকতা দিতে পারেন না। 

বৈঠকে তিনি আরও বলেন, ব্র্যান্ড এবং আমাদের সরবরাহকারীদের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব এ অসাধারণ প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমাদের সহায়তা করেছে এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব এটি ধরে রাখতে আমাদের সাহায্য করবে।

বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিষ্টোফার উইলসনসহ মার্কিন সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, টেক্সটাইল বিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি উইলিয়াম জ্যাকসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ান পরিচালক জেনিফার লারসন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লেবারের পরিচালক মরিন হ্যাগার্ড, বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক ফারুক সোবহান, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী, ম্যাকলার্টি অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিনিধি টেরেসিতা শ্যাফার, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন, ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান মার্কিন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট ষ্টেকহোল্ডারদের অবহিত করেন বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ শিল্প হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কীভাবে বিগত বছরগুলোতে রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে। তিনি আরও অবহিত করেন যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গ্রিন পোশাক কারখানার আবাসস্থল এখন বাংলাদেশই। তিনি শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিল্প কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ এবং ব্যবস্থা সম্পর্কেও অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করেন।

তিনি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শূল্ক কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিজিএমইএ সভাপতি মার্কিন ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্পে, বিশেষ করে নন-কটন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি একটি সমন্বিত আচরণবিধির প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন। কারণ একাধিক নিরীক্ষা কেবল সময় ও অর্থেরই অপচয় করে না বরং প্রতিষ্ঠানের কমপ্লায়েন্সকেও জটিল করে তোলে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ও উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।

এমআই/এসএসএইচ